এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : নোয়াখালীর সূবর্ণচরে গৃহবধূকে গণধর্ষণের আলামত মিলেছে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. খলিল উল্যাহ মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে মূলহোতা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও মেম্বার রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নির্দেশ দেয়ার পর গতকাল তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আরো ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরদিকে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. খলিল উল্যাহ বলেন, গণধর্ষণের ঘটনার আলামত পাওয়া গেছে। এখন রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে।
গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ তা ফাইনাল হবে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আজিম মানবজমিনকে বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষাকালে ধর্ষিতার শরীর থেকে সংগ্রহ করা আলামত পরীক্ষার জন্য গতকাল আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির নির্দেশে বুধবার গভীর রাতে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় মামলার আরেক আসামি বেচুকেও গ্রেপ্তার করা হয়। চরজব্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, রাতে পুলিশের দু’টি দল জেলার সদর উপজেলার উত্তর ওয়াপদার নুরু পাটওয়ারীর বাজার সংলগ্ন বেচু মুহুরীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রুহুল আমিন মেম্বার ও সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারে ৫ নম্বর আসামি বেচুকে গ্রেপ্তার করে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বার যদি অপরাধী হয় তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক। অপরাধ প্রমাণিত হলে, দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানান স্থানীয় আওয়ামী লীগের এই নেতা।
এদিকে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। সচেতন ছাত্র সমাজের ব্যানারে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড়ে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নোয়াখালী সরকারি কলেজ, সোনাপুর কলেজ, মহিলা কলেজ ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে।
ভোটকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনের নির্দেশে গত রোববার রাত ১২টার দিকে ঘরের দরজা ভেঙে ভিকটিমের ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে সোহেল, হানিফ, স্বপন, চৌধুরী, বেচু, কুড়াইল্যা বাসু, আবুল, মোশারফ, সালাউদ্দিনসহ ১০ জন। এ সময় তারা ভিকটিমের স্বামী সিরাজ উদ্দিনকে মারধর ও ৪ সন্তানকে বেঁধে রেখে পাশে পুকুর পাড়ে নিয়ে দল বেঁধে ধর্ষণ করে। পরে এই ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। তবে মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারকে আসামি থেকে ও ধানের শীষে ভোট দেয়ার তথ্য বাদ দিয়ে মামলা রেকর্ড করে থানা পুলিশ। এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়।