এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : মার্কিন দুই হাঙর গবেষক ওশেন রামসি ও তার প্রেমিক জুয়ান অলিফ্যান্ট। সমপ্রতি তারা এ যাবৎকালের রেকর্ডে সব থেকে বড় গ্রেট হোয়াইট হাঙরের দেখা পেয়েছেন। সেই হাঙরের সঙ্গে তুলেছেন ছবিও। কিন্তু তাদের রয়েছে অন্য আরেক মহান উদ্দেশ্যও। এর মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইতে হাঙর রক্ষায় আইন প্রণয়নের দাবির পুনরায় গতি বৃদ্ধি করতে চাইছেন।
বার্তা সংস্থা এপিকে ওশেন রামসি বলেন, মঙ্গলবার ওয়াহুতে তিনি প্রথমবারের মতো এই হাঙরটির দেখা পান। এটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ২০ ফুট বা ৬ মিটার। জুয়ান অলিফ্যান্ট এ সাক্ষাৎটি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। হাওয়াইর ভূমি ও প্রাকৃতিক সমপদ বিষয়ক বিভাগ জানিয়েছে যে, তারা এই ছবি দেখেছেন।
একইসঙ্গে তারা অবগত যে টাইগার ও গ্রেট হোয়াইট হাঙর তিমি খেয়ে বেঁচে আছে। সমপ্রতি প্রেমিকার ভাইরাল হওয়া ছবিটি তুলেছেন অলিফ্যান্ট। তার আশা হয়তো এরকম আরেকটি হাঙরকে তারা খুঁজে পাবেন। তিনি জানান যে, ওই হাঙরটিকে সমুদ্রের যে অঞ্চলে পাওয়া গেছে সেখানে তিনি অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছেন। যদিও তাদের সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে।
রামসি ওয়াহুতে একটি সমুদ্র অভিযান ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এখানে তার একমাত্র অংশীদার অলিফ্যান্ট। রামসি বলেন, তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই হাওয়াইতে হাঙর শিকার নিষিদ্ধের দাবি তুলে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্যও চাপ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি আশা করেন এবারই হয়তো তার এ স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। রামসির দাবি, এই দানবাকৃতির হাঙরের সঙ্গে তার ছবি প্রমাণ করে যে তাদেরকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই বরং তাদের টিকে থাকতে আমাদের সাহায্য দরকার। তিনি আরো বলেন, মানুষ চাইলে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঙরের সঙ্গে নিরাপদভাবে থাকতে পারে। হাঙর সামনে পড়লে তাদেরকে হত্যা না করে কিছু সাধারণ আচরণ করলেই যথেষ্ট হয়। এ বিষয়ে তার প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকে।
তার দল হাঙরের আচরণ ও পরিচিতি চিহ্নিত করে প্রাপ্ত তথ্য অন্য গবেষকদের কাছে পাঠিয়ে দেন। একইসঙ্গে ফেডারেল কর্মকর্তাদের কাছেও পাঠান। এর আগে তিনি গবেষণার জন্য একটি হাঙরের সঙ্গে মেক্সিকোর গুয়াদালুপে দ্বীপ পর্যন্ত সাঁতরে গেছেন। এ ছাড়া হাঙর দেখতে তিনি খাঁচা ছাড়া ডাইভিং দলের নেতৃত্ব দেন। সামুদ্রিক অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো হাঙর সংরক্ষণে হাওয়াইতে কোনো ফেডারেল আইন নেই। তবে তাদের পাখনা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেখানে। রামসির দাবি, গণমাধ্যমগুলো হাঙরকে যেভাবে তুলে ধরে তাতে তাদের জন্য মানুষের সহানুভূতি কাজ করে না। কিন্তু আপনি শুধু তাদের খাদ্যাভ্যাসের জন্য ঘৃণা করতে পারেন না। একটু আদর্শ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তাদের প্রয়োজন রয়েছে। মানুষকে বুঝতে হবে হাঙরের কামড়ানোর খবর কোনো নিয়মিত বিষয় নয়।