এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে মানববন্ধন করেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম ব্যানারে তারা এ মানববন্ধন করে। কর্মসূচি চলাকালে প্রায় দেড় ঘণ্টা শাহবাগ মোড় হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল ও তাদের জন্য আলাদা কমিশন গঠন, জাতির পিতা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অবমাননাকারীদের শাস্তি প্রদান, মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পারিবারিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সামাজিক মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনাবিরোধী প্রচার বন্ধ এবং সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান- প্রজন্মদের বয়সসীমা প্রচলিত নিয়মে আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ও তাদের সন্তানদের নিয়োগ ও ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
গত সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা তুলে দিলেও আইনানুযায়ী প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা বহাল রয়েছে। এরপরই গতকাল বিকালে শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের হাতে দেখা যায়, ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল ও শতভাগ বাস্তবায়ন চাই, ‘স্বঘোষিত রাজাকারের বাচ্চাদের’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নয়, এই দেশ তাদের জন্য না, সরকারি সব চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা চাই, মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় রাজাকারদের ঠাঁই নাই, ৭৫ থেকে ৯৬ এ ২১ বছরের কোটার হিসাব চাইসহ নানা সব ফেস্টুন-ব্যানার। এ সময় সুমন নামে আন্দোলনরত এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলেন, স্বঘোষিত রাজাকারদের কথায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা মোটেও সমীচীন হয়নি।
যারা মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশকে স্বাধীন করেছে, তাদের পরিবার প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে কম। স্বাধীনতা যুদ্ধে তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তাই মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের মধ্য দিয়ে সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি সম্মান সুপ্রতিষ্ঠিত করার দাবি জানান তিনি।
পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (পেট্রল) তানভীর হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে বেশ কিছু শিক্ষার্থী শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছিল। ব্যস্ত সড়কে অফিস শেষে বাসায় ফেরত মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন সেজন্য, সোয়া ৫টার দিকে অবরোধকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম এর ব্যানারে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনেও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা।