ভারতের বিহার অঙ্গরাজ্যে গরু চুরির সন্দেহে তিন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে গো-রক্ষকরা। শুক্রবার সকালে লরিতে একটি মহিষ ও একটি বাছুর তোলার সময় তাদের ধরে গরু চুরির সন্দেহে বেধড়ক মারধর করে স্থানীয় গো-রক্ষকরা। এতে তাদের মৃত্যু হয়। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার ভোরে বিহারের সারণ গ্রামে গো-রক্ষার নামে পিটিয়ে মানুষ হত্যার এই ঘটনা ঘটে। নিহতদের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভারতে এর আগেও ‘গো-রক্ষকদের’ হামলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং সামাজিকভাবে নিম্নবর্ণের হিসেবে বিবেচিত গোষ্ঠীর সদস্যদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখ্য, হিন্দুরা গরুকে পবিত্র প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করে ও গরু হত্যাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুর দেশ ভারতে তাই গরু রক্ষার নামে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। সামপ্রতিক এই ঘটনায় তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সমালোচকদের দাবি, হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ ধরনের ঘটনা বেড়েছে। এরকম সহিংসতার ঘটনা প্রতিরোধে এই সরকার যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। এরপর থেকে গো-রক্ষার নামে হত্যা করা হয়েছে কয়েক ডজন মানুষকে। নির্যাতিত হয়েছেন আরো কয়েকশ’ মানুষ। বিশেষ করে মুসলিম ও নিচু বর্ণের গোষ্ঠীরা এ ধরনের হামলার শিকার হয়ে থাকে। বার্তা সংস্থা পিটিআইকে পুলিশ জানিয়েছে, গরু চুরির সন্দেহে তিন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে রুষ্ট জনতা। নিহতরা হলেন- রাজু নট, নৌসাদ কুরেশি, বিদেশ নট। এদের মধ্যে জনতার হাতে মার খেয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। বাকি একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। নিহতদের মধ্যে দু’জন নট সমপ্রদায়ভুক্ত। এদিকে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, সারণের সাংসদ হলেন বিজেপি নেতা রাজিব প্রতাপ রুডি। বিজেপির জমানাতেই রাজনীতিতে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে শুরু করেছে গো-রাজনীতি। এই ঘটনাতেও গৈরিকীকরণের ছায়া দেখছেন অনেকেই। স্থানীয়দের অভিযোগ বিগত বেশ কিছুদিন ধরে গো-হত্যার ঘটনা ঘটছিল ওই অঞ্চলে।