বান্দরবান সদর উপজেলার তারাছা ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি মংমং থোয়াই মারমাকে (৫০) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
আজ সোমবার দুপুরে রোয়াংছড়ি-বান্দরবান সড়কের শামুকছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
ওসি আরো বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দুপুরে রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে মোটরসাইকেলে করে বান্দরবান জেলা সদরে আসছিলেন। পথে সন্ত্রাসীরা তাঁকে পাঁচটি গুলি করে। তারপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
গুলিতে ঘটনাস্থলেই মংমং থোয়াই মারমা মারা যান। হাসপাতালে আনার সময় তাঁর দেহে প্রাণ ছিল না বলে গণমাধ্যমকে জানান সদর হাসপাতালের চিকিৎসক চিংম্রাসা।
মংমং থোয়াই মারমা তারাছা ইউনিয়নের মিক্যা জাই মারমার ছেলে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
এদিকে মংমং থোয়াই মারমার হত্যার খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুটে যান।
বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে রোয়াংছড়ি বাজারের একটি হলরুমে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মোটরসাইকেল চালিয়ে ফেরার পথে ব্রাশফায়ার করে আওয়ামী লীগ নেতা মংমং থোয়াই মারমাকে হত্যা করা হয়েছে।
‘আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে পাহাড়ে আধিপাত্য বজায় রাখতে জনসংহতি সমিতির অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে একের পর এক আওয়ামী লীগ নেতাদের গুলি করে হত্যা করছে’ বলেও দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। যদিও এ ব্যাপারে জনসংহতি সমিতির দুই পক্ষের কারোর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় বিভিন্ন সময়ে অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক হানহানির ঘটনা ঘটছে। এর আগে গত মে মাসে আধিপাত্য বিস্তারের জের ধরে বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নের তাইংখালী বাজারে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হামলায় জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সহযোগী সংগঠন যুব পরিষদের সদস্য বিনয় তঞ্চঙ্গ্যাকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই দিন রাতে রাবার বাগানের শৈলতনপাড়া থেকে পুরাধন তঞ্চঙ্গ্যা (৩২) নামের যুব পরিষদের আরেক কর্মীকে অপহরণ করা হয়।
এই ঘটনার পরের দিন ৯ মে জেএসএসকর্মী রিপন তঞ্চঙ্গ্যাকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর বাবা জয়মনি তঞ্চঙ্গ্যাকে (৫২) গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। একদিন পর ১০ মে আওয়ামী লীগের কর্মী ক্যচিং থোয়াই মারমা খুন হন।
এরপর ২৫ ’মে বান্দরবান পৌর শাখা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চথোয়াই মং মারমা’কে অপহরণ করে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ২৫ জুন রোয়াংছড়ি উপজেলায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কর্মী অংথুই চিং মারমাকে (৩৮) গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।