ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মনির হোসেন নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি বাজার সংলগ্ন পাগলী নদীর উপর পল্লীবিদ্যুতের সেচ প্রকল্পের ঝুলন্ত তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মনির হোসেনের। নিহত মনির হোসেন আশুগঞ্জ উপজেলার চরলালপুর গ্রামের মৃত রহিছ মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি বাজার থেকে পাগলী নদীর উপর দিয়ে একই উপজেলার গৌরনগর চরে সেচ প্রকল্পের জন্য ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন টানে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বর্তমানে ভরা বর্ষার ফলে নদীর পানির সাথে বৈদ্যুতিক লাইনের উচ্চতা মাত্র পাঁচ ফুটে নেমে আসে।
প্রতিদিনের মতো মনির হোসেন অন্যান্য জেলেদের সাথে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে উক্ত নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন পার হবার সময় তার হাতের বাঁশের ছৈ-টি হাই ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারে লেগে যায়। এতে সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নৌকার উপর ঢলে পড়ে। পরে অন্যান্য জেলেরা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত মনির হোসেনের পরিবার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দায়িত্বশীল কতৃপক্ষ ও সেচ প্রকল্পের মালিকদের দায়ী করছেন।
উল্লেখ্য, গত বর্ষায়ও উক্ত লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এরপরও কীভাবে ভরা বর্ষায় ১১ হাজার ভোল্টের ঝুঁকিপূর্ণ লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে রাখা হয়েছে এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নবীনগর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক নীল মাধব বণিক বলেন, আমাকে খোঁজ খবর নিয়ে কথা বলতে হবে। এর আগে কিছুই বলতে পারবো না।
সমিতির কৃষ্ণনগর অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ তৈয়ব মিয়া বলেন, তার চুরি হয়ে যাওয়ার কারণে প্রকল্প মালিকদের অনুরোধে লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। পানি বেড়ে যে এত কাছে এসে গেছে আমরা জানতে পারিনি।
তবে সেচ প্রকল্পের মালিক নূরু মিয়া ও কাউছার মোল্লার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
নবীনগর থানার ওসি রঞ্জিত কুমার সাহা জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।