বেসিক ব্যাংক লোকসানে আছে। এই ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতার পরিমাণ অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বেশি। একদিকে ব্যাংককে লোকসানে রাখবেন, অপরদিকে বেশি বেতন নেবেন, এটা হতে পারে না। তাই বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা কমানো হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলে সেনা কল্যাণ ভবনে অবস্থিত বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মাজিদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রফিকুল আলম। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম ও অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক।
স্বাগত বক্তব্যে ব্যাংকের চেয়ারম্যান বেসিক ব্যাংকের সার্বিক আর্থিক পরিস্থিতির একটি বিবরণ তুলে ধরেন।
অর্থমন্ত্রী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, বেসিক ব্যাংকের ঋণখেলাপিদের কাছ যান, তাদের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের সুবিধা নিতে বলেন। যারা ঋণ শোধ করতে চান তাদের সর্বোচ্চ সহায়তা করবো। যারা টাকা মারার ধান্ধায় আছেন তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এই টাকা উদ্ধারে আপনাদের খোলাপিদের কাছে যেতেই হবে।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, এই ব্যাংকের মাত্র ৭২টি শাখার জন্য ২ হাজার ১০০ কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন। যে ব্যাংকে এত জনবল তারা বছরে ৩৫৪ কোটি টাকা লোকসান দেয় কীভাবে? ব্যাংকের এত জনবল কি কাজ করে?
অর্থমন্ত্রী ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের উদ্দেশে বলেন, ব্যাংকের লোকসান কমাতে কর্মকর্তারা বসে সিদ্ধান্ত নেন কি করবেন? আমাকে আপনাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন। পরবর্তীতে আমিও আমার সিদ্ধান্ত নেবো।
অর্থমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বেসিক ব্যাংক কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে সে পরিকল্পনা করেন। আমাকে সেই পরিকল্পনা জানান। আপনারা আপনাদের কাজ করেন। আমরা আমাদের কাজ করবো। এখানে আমি বারবার আসবো না। আজকে এসেছি, আপনাদের একটা সুযোগ দিয়ে গেলাম।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের কোনও কর্মকর্তা কাজ না করলে, অনিয়ম করলে একবার সংশোধন করবো। দ্বিতীয়বার করবো না। চাকরি থাকবে না। আপনি কোর্টে যান। কোনও সমস্যা নাই। কিন্তু কোনও দিন আমাদের ভালোবাসা পাবেন না।