আগস্টের ২২ তারিখ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে কিনা সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলছে না সরকার। রবিবার (১৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিসে আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, ‘প্রত্যাবাসন যেকোনও সময় শুরু হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পর্দার অন্তরালে অনেক কিছু হচ্ছে, চেষ্টা হচ্ছে। তবে সব চেষ্টা সফল হবে এমন নয়। আগামী কয়েক সপ্তাহ আমরা রোহিঙ্গাদের উৎসাহিত করবো, যাতে তারা নিজ দেশে ফিরে যায়। এটা শুধু বাংলাদেশের না, এটা রোহিঙ্গাদেরও প্রধান উদ্দেশ্য। যদি তারা ফিরে না যায়, তবে শুধু জমির অধিকার নয় তারা তাদের সব অধিকার হারাবে।’
পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, ‘প্রত্যাবাসন বাংলাদেশের কাছে সবসময় একটি অগ্রাধিকার এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। অনেকে রোহিঙ্গা সমস্যাকে বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমারের সমস্যা বলে বর্ণনা করে। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। এটি প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমার এবং তাদের লোকদের মধ্যে সমস্যা।’
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রোহিঙ্গা বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হবার সম্ভাবনা আছে। এই সমস্যার সমাধানটি সহজ নয়।’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান তিনটি। প্রথমটি প্রত্যাবাসন; পরেরটি পুনর্বাসন এবং সবশেষটি সমাজে আত্মস্থ করে নেওয়া (রিইন্টিগ্রেশন)।’
বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আত্মস্থ করে নেবে কিনা এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই না। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে তাদের আত্মস্থ করার সুযোগ নেই।’
রোহিঙ্গা ইস্যুটিতে আন্তর্জাতিকীকরণ করার ওপর জোর দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে এ বিষয়ে আরও সচেষ্ট হতে হবে।’
২০১৪ সালে তার মিয়ানমার সফরের উদাহরণ টেনে ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গা বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা এ বিষয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়নি।’
চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘এই গোটা ঘটনায় কয়েকজন জেনারেল, কয়েকজন বৌদ্ধ নেতা ও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা সুবিধা নিচ্ছে এবং গোটা মিয়ানমারকে বিপদে ফেলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাখাইনে বিগত দশকগুলোতে বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা চালানো হয়েছে। এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নতুন করে প্রচারণা চালাতে হবে।’