যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। ২০০৭ সালে আইএনএক্স মিডিয়ায় প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের অনুমোদনে অনিয়ম ও অর্থ তছরুপের মামলায় গ্রেফতারি এড়াতে তার আগাম জামিনের আবেদন মঙ্গলবার খারিজ করে দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। তার পর তার আইনজীবী কপিল সিবাল সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছে গেলেও এদিন শুনানির ব্যবস্থা করতে পারেননি। তার খানিক পরেই জোরবাগে চিদম্বরমের বাড়িতে পৌঁছোয় সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)–এর কর্মকর্তারা। সে সময় বাড়িতে ছিলেন না তিনি। এই দুই তদন্তকারী সংস্থাই তাকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চায়।
দিল্লি হাইকোর্ট চিদম্বরমের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিতেই সারা ভারতে সাড়া পড়ে যায়। কারণ, হাইকোর্ট এক্ষেত্রে চিদম্বরম সম্পর্কে বেশ কড়া মনোভাব নেয়। বিচারপতি সুনীল গৌড় জানিয়ে দেন, তদন্তকারী সংস্থাগুলোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী চিদম্বরমই এই মামলার ‘কিং পিন’ হতে পারেন। আইএনএক্স মিডিয়ায় বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে তাকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাই আদালত তদন্তে হস্তক্ষেপ করবে না। উপযুক্ত তদন্তের স্বার্থে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে। আদালত বলেছে, ‘এটি অর্থ তছরুপের তাৎপর্যপূর্ণ মামলা। এই মামলায় জামিন মঞ্জুর করা হলে সমাজে ভুল বার্তা যাবে।’ তা ছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব নেয়ার প্রয়োজনের কথাও বলে হাইকোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি গৌর অবসর নেবেন।
রায়ের পরে হাইকোর্ট চত্বরে সাংবাদিকরা চিদম্বরমের আইনজীবী কপিল সিবালকে প্রশ্ন করতে এলে অন্যদিনের মতো দাঁড়িয়ে কথা বলেননি তিনি। বরং কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা ও চিদম্বরমের সাবেক সহকর্মীকে দেখা যায় উদ্বিগ্ন মুখে ‘গাড়ি কোথায়, গাড়ি কোথায়’ বলে ঘোরাঘুরি করতে। সেখান থেকে সোজা তিনি যান সুপ্রিম কোর্টে। অভিষেক মনু সিংভি ও সলমন খুরশিদও পৌঁছে যান সেখানে। কিন্তু সিবাল নিজে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করলেও (সাধারণত এই কাজটা জুনিয়ররা করেন) তাতে লাভ হয়নি। রেজিস্ট্রার তাকে জানিয়েছেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় চিদম্বরমের আর্জি পেশ করা হবে প্রধান বিচারপতির সামনে।
তার পরেই সন্ধ্যায় সাবেক অর্থমন্ত্রীর বাড়িতে যায় সিবিআইয়ের একটি দল। সেখানে ছিলেন না চিদম্বরম। কিছুক্ষণ পর ফিরে যায় সিবিআইয়ের দলটি। কিন্তু ততক্ষণে ইডি–র তদন্তকারী দল হাজির হয় সেখানে। অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৭ সালে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম করার অভিযোগ রয়েছে চিদম্বরমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নিয়মের তোয়াক্কা না করে আইএনএক্স মিডিয়ায় মোট ৩০৫ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদন করা হযেছিল। এছাড়া, ৩৫০০ কোটি রুপির এয়ারসেল–ম্যাক্সিস মামলাতেও অভিযুক্ত তিনি।