জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আজীবন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে কাজ করেছেন দেশ ও মানুষের অধিকারের প্রশ্নে কখনো আপোষ করেননি। তিনি দেশের মানুষের মনের ভাষা বুঝতেন বলেই তাদের মতামতের ওপর শ্রদ্ধা রেখেই দেশ পরিচালনা করছেন। ফলে মানুষের অন্তরে তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন। দেশবাসীর অন্তর জয় করে অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়েই তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।
শনিবার প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠfতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চেহলাম উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জাপা আয়োজিত দিনব্যাপী গণভোজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগরের ৫২টি থানায় এবং পার্টির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনসমুহ রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে গণভোজের আয়োজন করা হয়। এসব গণভোজের সিংহভাগই স্থানে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের নিজে গরীবদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেন। রাজধানী ছাড়াও রংপুরসহ সারাদেশে এরশাদের চেহলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, এস.এম ফয়সল চিশতী, সাহিদুর রহমান টেপা, সৈয়দ আব্দুল মান্নান, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, অ্যাড. রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, উপদেষ্টা ড. মোঃ নূরুল আজহার, ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জহির, আরিফুর রহমান খান, সরদার শাহজাহান, হেনা খান পন্নি, জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম-মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, শেখ আলমগীর হোসেন, মনিরুল ইসলাম মিলন, হাসিবুল ইসলাম জয়, অ্যাড. শাহিদা রহমান রিংকু, সুলতান আহমেদ সেলিম, কেন্দ্রীয় নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভুইয়া, ফকরুল আহসান শাহজাদা, হারুন অর রশিদ, আশরাফুজ্জামান খান, সুলতান মাহমুদ, সুজন দে, শারমিন পারভীন লিজা, অ্যাড. লাকী বেগম, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, হুমায়ুন খান, ইফতেকার আহসান হাসান, গোলাম মোস্তফা, সুমন আশরাফ, সৈয়দা পারভীন তারেক, হাফেজ ক্বারী ইছারুহুল্লা আসিফ, মিজানুর রহমান মিরু, মেহেজেবুন্নেছা টুম্পা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জিএম কাদের বলেন, এরশাদ ছিলেন এদেশের মানুষের মনের রাজা। এখনো দেশের মানুষ তাকে মনে রেখেছে এবং আজীবন মনে রাখবে। তিনি রাজনীতির চার ভাগের একভাগ সময়ে দেশ পরিচালনা করে উন্নয়নের অসামান্য কীর্তি গড়েছেন। আর বিরোধী দলীয় নেতা বা বিরোধী দলের সারিতে থেকেও গণমানুষের কল্যানে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, সকল বিরোধী দলের বিরোধীতা উপেক্ষা করে এরশাদ উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। সকল বিরোধীতা অগ্রাহ্য করে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে সৈন্য পাঠিয়েছিলেন। এখন দেশবাসী এরশাদের সকল কাজের সুফল ভোগ করছেন। পল্লীবন্ধু জনগণের কল্যাণে অনেক স্বপ্নই বাস্তবায়ন করতে পারেননি। আমরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবো। তিনি সব সময় দেশের হতদরিদ্র মানুষের পাশে ছিলেন, আমরাও তার আদর্শে অনুপ্রাণীত হয়ে অসহায় মানুষের পাশে থাকবো। আমরা দেশের অবহেলিত মানুষের কল্যানে কর্মসূচি দিয়ে পল্লীবন্ধু এরশাদের রাজনীতি এগিয়ে নিয়ে যাবো।
এরআগে সকাল সাড়ে নয়টায় আব্দুল্লাহপুর থেকে গণভোজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন জিএম কাদের। এরপর তিনি গুলশান, উত্তর থান, তেজগাও, কাওরান বাজার, মোহাম্মদপুরসহ মহানগরের উত্তরের বিভিন্ন থানায় গণভোজের সূচনা করেন। এরপর মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন থানায় গণভোজে অংশ নিতে তিনি শাহজাহানপুর, কমলাপুর, টিকাটুলী, গেন্ডারিয়াসহ বিভিন্ন থানা হয়ে শ্যামপুর-কদমতলীতে যান। সেখানে স্থানীয় এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার আয়োজনে মুরাদপুর, মীরহাজীরবাগ, মুন্সিবাড়ী, জুরাইন, ঢাকা ম্যাচ, মোহাম্মদবাগ ও শ্যামপুর বালুর মাঠে দারিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। সেখান থেকে তিনি ঢাকা-৬ নির্বাচনী এলাকায় কাজী ফিরোজ রশীদের আয়োজনে গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, কোতায়ালী ও সুত্রাপুরে খাবার বিতরণ করেন।
এরশাদের চেহলামে খাবার নিয়ে হট্টগোল
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চেহলামে খাবার বিতরণ নিয়ে হট্টগোল দেখা গেছে। শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ চিত্র দেখা যায়। এ সময় মাইক থেকে বারবার বলা হয়, পর্যাপ্ত খাবার আছে। আপনারা বিশৃঙ্খলা করবেন না। খাবারের প্যাকেট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে খাবার বিতরণ বন্ধ রেখে সকলকে বসিয়ে রাখা হয়। পরে আবার খাবার বিতরণ করা হয়।
এরশাদের চেহলাম উপলক্ষে রাজধানীতে ৫১টি এবং রংপুরে ৩৫টিসহ সারাদেশের সব উপজেলা ও ইউনিয়নে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।