কাশ্মীরে অবৈধ দখলদারিত্ব হলো ভারতে ক্ষমতাসীন ডানপন্থি বিজেপি সরকারের মুসলিমদের টার্গেট করার একটি বড় কৌশল। শনিবার আসামে বহুল বিতর্কিত এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জির বিষয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্ট উল্লেখ করে এ কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ঘোষিত চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি থেকে কমপক্ষে ১৯ লাখ মানুষকে বাদ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই মুসলিম। তাদেরকে অবৈধ অধিবাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। একে আসামে সংখ্যালঘু মুসলিমদের টার্গেট করা হিসেবে অভিহিত করছেন সমালোচকরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
এ নিয়ে টুইট করেছেন ইমরান খান। তিনি তাতে বলেছেন, ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকারের মুসলিম জাতি নিধনযজ্ঞের এলার্ম বেল সারাবিশ্বে বাজানো উচিত।
অবৈধভাবে ও একতরফাভাবে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এনআরসি প্রকাশ করা হয়েছে।
ভারতের দরিদ্রতম রাজ্যগুলোর অন্যতম আসাম। সেখানে অবৈধ অভিবাসী বিরোধী উত্তেজনা বিরাজমান অনেক বছর ধরে। বসবাসকারীদের, বিশেষ করে বাংলাভাষীদের বহিরাগত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অভিযোগ করা হয়, তাদের বেশির ভাগই আসামে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে গিয়ে। তারা আসামের নাগরিকদের কাছ থেকে কর্মসংস্থান ও জমি কেড়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ আছে। যারা এনআরসি থেকে বাদ পড়েছেন তারা ভারতীয় নাগরিক এটা প্রমাণ করার জন্য সময় পাবেন ১২০ দিন। এ জন্য তারা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন। যদি সেখানে তারা অবৈধ প্রমাণিত হন তাহলে তারা উচ্চতর আদালতে আপিল করতে পারবেন।
ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল যাতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা অবলম্বন করে এটা নিশ্চিত করতে আসাম সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সমালোচকরা অভিযোগ করেন, মোদি সরকারের ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা উস্কে দিচ্ছে। তারা বৈধ মুসলিম নাগরিকদের টার্গেট করতে রেজিস্টারের অপব্যবহার করছে। এর আগে নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সহচর, বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবৈধ অভিবাসীদের উইপোকা আখ্যায়িত করে তাদেরকে উৎখাত করার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। ওদিকে আসামের সরকারি কর্মকর্তারা জানেন না, এখন এসব ‘বিদেশী’কে নিয়ে কি করা হবে। এদেরকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এ অবস্থায় পাকিস্তানের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী শিরিন মাজারি প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছেন, হিটলারের জার্মানি এবং মোদির ভারতের মধ্যে এখনও কি কোনো পার্থক্য দেখতে পায় পশ্চিমারা? তারা কি আবারও একটি গণহত্যা অনুমোদন করছেন? ওদিকে গত ৫ই আগস্ট কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার পর দখলীকৃত কাশ্মীরে সম্ভাব্য মুসলিম জাতি নিধনের বিষয়ে বিশ্ববাসীকে সতর্কতা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি অব্যাহতভাবে সেই বার্তা দিয়েই যাচ্ছেন। তার ডাকে ৩০ শে আগস্ট দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ‘কাশ্মীর আওয়ার’ পালন করে পাকিস্তান।