ছেলে ধরা, পদ্মা সেতুতে মাথা লাগার গুজবের পর নতুন ‘গুজব’ ডালপালা মেলতে পারে। এসব গুজবের কারণে সৃষ্টি হতে পারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি। সহসাই এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে অসাধু মহল বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। নতুন করে গুজব ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে এমনটাই জানিয়েছে। সরকারের ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এর আগে গত জুন ও জুলাই মাসে সারা দেশে ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয়। ঢাকাসহ সারা দেশে ছেলেধরা সন্দেহে বেশ কয়েক জনকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটে। এরপর সরকারের তরফ থেকে মিডিয়াতে একটি তথ্য বিবরণী পাঠানো হয়। তথ্য বিবরণীতে গুজবের ভিত্তিতে মানুষ হত্যার জন্য হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, ছেলে ধরা সন্দেহে সাম্প্রতিক কয়েকটি হতাহতের ঘটনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে ছেলেধরা সন্দেহে নিরীহ মানুষ পিটিয়ে হত্যা করছে।
ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত যে কোনো ধরনের গুজব ছড়ানো ও আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থি এবং গুরুতর দণ্ডনীয় অপরাধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্দেশনা দিয়ে জুলাই মাসের শেষ দিকে একটি পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিপত্রে জানানো হয়, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, একটি অসাধু মহল বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। সমপ্রতি গুজব ছড়িয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে নিরীহ মানুষের ওপরে আক্রমণ করা হয়েছে। কয়েকজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো গুজব প্রতিরোধের জন্য নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণসহ গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীদের আধিক্য এবং বয়সজনিত কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে গুজব রটনা অনেকটাই সহজ। এ কারণে গুজব রটনাকারীরা অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারণকে এ কাজে ব্যবহার করছে। এ অবস্থায় গুজব থেকে সাবধান থাকার জন্য অভিভাবক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকরা সচেতন করবেন। এ ধরনের কোনো ঘটনা আর যাতে কোথাও না ঘটতে পারে, সে জন্য সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থেকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন তৎপরতা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সতর্ক অবস্থানের পর ছেলে ধরার গুজব এক সময় বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মাথা লাগার গুজবও এক সময় বন্ধ হয়ে যায়।