গ্রামে রাতে হানা দিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী। ভয়ে পাশের বাগিচায় গিয়ে আপেল গাছে উঠে পড়েছিলেন মোহাম্মদ মাল্লা। গোটা রাত সেখানেই কাটাতে হয়েছে ওই যুবককে। পুলওয়ামার রামহু গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার কোপে থাকা কাশ্মিরে গত কয়েক দিন ধরে তাদের এমনই আতঙ্কে দিন কাটছে।
রামহুর বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত সপ্তাহে বিশেষ মর্যাদা লোপ ও নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দাদের একাংশ। তাদের অভিযোগ, তার পর থেকেই রাতে গ্রামে হানা দেয়া শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। বাসিন্দাদের বেধড়ক মারধর করার পাশাপাশি সৈন্যরা বাড়িঘর, গাড়ি ভাঙচুর করছেন। কেড়ে নিচ্ছেন বাসিন্দাদের পরিচয়পত্র। স্থানীয় মসজিদগুলোর লাউডস্পিকার থেকে ঘোষণা আটকাতে সেগুলোর প্রবেশপথই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইমামদেরও হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের দাবি, ফের ‘পাথর ছুড়লে’ কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে পুলিশ। বাসিন্দাদের দাবি, ইতিমধ্যেই গ্রামের ২৩ জন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারির পর থেকে আর তাদের দেখা পাননি পরিবারের সদস্যেরা
গ্রেফতারির ভয়ে এখন গ্রামের বাইরে রাত কাটাচ্ছেন অনেক যুবক। তাদেরই মধ্যে এক জন মোহাম্মদ মাল্লা। রামহু থেকে ফোনে বললেন, ‘‘কয়েক দিন আগে মাগরিবের নামাজের ঠিক আগে শিস শুনতে পেলাম। গ্রামে বাহিনী ঢুকলে এ ভাবেই শিস দিয়ে একে অপরকে সতর্ক করি আমরা। গ্রামের পাশেই আমার বাগিচা। সেখানে পালিয়ে গেলাম কয়েক জন।’’ ভয়ে আপেল গাছে উঠে পড়েছিলেন তারা। রাতে আর ফেরার সাহস পাননি। গাছেই রাত কাটিয়েছেন। খিদে মিটিয়েছেন আপেল খেয়ে।
পুলওয়ামার পুলিশের মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘‘যারা গোলমাল পাকাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবেই। ওই গ্রামের কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে পাথর ছোড়ার অভিযোগ আছে।’’ কেবল রামহু নয়, গোটা পুলওয়ামা জেলাতেই এখন ব্যারিকেডের ছড়াছড়ি। বাহিনীর গাড়ি ছাড়া রাস্তায় নেই কোনো যানবাহনও।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা