ছাত্রলীগের কারণে আজ দেশের মেধাবী সন্তানরা খুনিতে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ শুক্রবার নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, একজন মাত্র ব্যক্তির ক্ষমতালিপ্সার কারণে এই সংগঠনটি এখন এতটাই অভিশপ্ত সংগঠনে পরিণত হয়েছে যে, বুয়েটের মতো মেধাবীদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েও শুধুমাত্র ছাত্রলীগের কারণে মেধাবীরা পরিণত হচ্ছে খুনিতে। এরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর হল ও হোষ্টেলগুলোতে বুক সেলফের পরিবর্তে টর্চারসেল গড়ে তুলেছে। দেশের প্রতিবাদী ছাত্রসমাজ আজ স্ফুলিঙ্গের মতো জেগে উঠেছে। দেশের মানুষকে গুম-খুন-অপহরণ করে আর দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে গত এক দশক ধরে যেভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে, এটি জনগণ আর চলতে দেবে না। দেশের ছাত্র সমাজ এসব অনাচার আর মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, সরকারের পতন ঘণ্টা বেজে গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের শ্লোগানের ভাষা শুনুন। ক্ষমতাসীনদের জুলুম এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মানুষের রক্তে আগুনজ্বলা দ্রোহ দেখুন।
জনগণের আওয়াজ শুনুন। সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আওয়াজ উঠেছে, আধিপত্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে। আধিপত্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী অপশক্তির এ দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে। কোন আন্দোলন যেমন ব্যর্থ হয় না তেমনি দেশবিরোধী চুক্তি ও শহীদ আবরারের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনও ব্যর্থ হবে না ইনশাল্লাহ।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আপনারা দেখেছেন, বার বার ভারতে সফরে গিয়ে অসংখ্য দেশবিরোধী চুক্তি করে আসছেন বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রী। জনগণ জানতেও পারছে না কি চুক্তি হচ্ছে, কেন হচ্ছে এইসব চুক্তি? এইসব চুক্তিতে কার স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে? বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো, নিশিরাতের সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর এই বক্তব্যে দেশের মানুষ এতই লজ্জা পেয়েছে যে, তারা এই কথায় হাসতেও ভুলে গেছে। আমরা মনে করি, পারস্পরিক স্বার্থ ও সমমর্যাদা রক্ষার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বের। স্বামী-স্ত্রীর নয়। এখানেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির মৌলিক বিরোধ। তাই জনগণের দল হিসেবে বিএনপির স্পষ্ট দাবি, ভারতের সাথে গত এক দশকে কি কি চুক্তি হয়েছে, কত চুক্তি হয়েছে, প্রতিটি চুক্তি সম্পর্কে জনগণকে বিস্তারিত জানাতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী রাখা আওয়ামী সরকারের পাশাপাশি তাদের প্রভুরাও জড়িত বলে জনগণ মনে করে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমূখ।