বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে কি না- সে বিষয়ে আজ দুপুরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কয়েকজন গণমাধ্যমকে জানান, বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলন ১৩ ও ১৪ই অক্টোবর দু’দিন স্থগিত রাখা হয়। গতকাল রাতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিয়ে বসার কথা থাকলেও ভর্তি পরীক্ষার জন্য একত্রিত হওয়া সম্ভব হয়নি। এ কারণে আজ মঙ্গলবার সকালে বসার কথা রয়েছে।
তারা বলেন, সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হলে আলোচনা করা হবে। সেখানে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে, না কি আল্টিমেটাম দিয়ে তা স্থগিত রাখা হবে, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
আন্দোলন সমন্বয়কারীদের একজন ইসমাইল হোসেন তাজ জানান, আলোচনার সিদ্ধান্ত দুপুরে সাংবাদিকদের জানানো হবে। তিনি বলেন, গতকাল রাতে আন্দোলনের বিষয়ে বৈঠকের কথা থাকলেও ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে নানা ব্যস্ততায় সেটি সম্ভব হয়নি। আজ আমাদের বৈঠক হবে। সেখান থেকে আন্দোলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তবে কিছু শিক্ষার্থী মনে করছেন, তাদের অধিকাংশ দাবি বাস্তবায়নের পথে। ইতিমধ্যে কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে।
যার কারণে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া উচিত হবে না।
এদিকে গতকাল ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার বুয়েটের শহীদ মিনারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে গত শনিবার দুই দিনের জন্য আন্দোলন শিথিল করে শিক্ষার্থীরা। সোমবার দু’দফায় অনুষ্ঠিত হয় ভর্তি পরীক্ষা। প্রথম দফায় সকাল ৯টা থেকে তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা হয়। পরে দুপুরে ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হয় দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা।
বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আন্দোলনের প্রভাব পরীক্ষায় পড়েনি। আবেদনকারীদের ৯০ শতাংশই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে গত ৬ই অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরদিন সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ। গত মঙ্গলবার গ্রেফতার ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীর পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।