কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, বর্তমানে যেসব উগ্রবাদী গ্রেফতার হচ্ছেন তাদের কেউ কেউ আগে থেকেই উগ্রবাদে সম্পৃক্ত ছিলেন আবার কেউ কেউ নতুন করে এতে জড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, কেউ কেউ নতুন করে র্যাডিকালাইজড হয়ে উগ্রবাদে জড়িয়েছে। যাদের ভেতরে অ্যান্টি বডি কম, মানসিকভাবে দুর্বল ও দেশপ্রেম নাই, মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ নাই, মতাদর্শিক জায়গায় ধারণা নাই, টলারেন্স নাই, জীবনের বাস্তবতা যারা মেনে নিতে না পেরে শর্টকাট পথ খুঁজছে তারাই র্যাডিকালাইজড হচ্ছে।
আজ শনিবার ‘ঢাকা পিস টক’ শীর্ষক এক প্রোগ্রামের উদ্বোধনী উপলক্ষে ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ইউএসএআইডি’র সহযোগিতায় সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিসার্ফ) এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জঙ্গিবাদের রিক্রুটার মটিভেটররা প্রতিনিয়িত ইন্টারনেটে লুকরেটিভ ও অ্যাট্রাকটিভ প্যাকেজ দিচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘হলি আর্টিসান হামলার পর জঙ্গিবাদবিরোধী কাজ বেশি হচ্ছে, যা আগে খুব একটা ছিল না। আমাদের এটা আরো বাড়াতে হবে। আমাদের একটি জঙ্গিবাদবিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরির কাজ করতে হবে।’
একই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং সিসার্ফের নির্বাহী পরিচালক শবনম আজিম বলেন, গবেষণার ফল বলে উগ্রবাদের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। কেননা একেক পরিস্থিতিতে এককভাবে উগ্রবাদের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো ছকেই এই উগ্রবাদকে সরলীকরণ করা যাবে না। সহিংস উগ্রবাদ বা এর ঘনীভূত রূপ সন্ত্রাসবাদ দমনের মতো একটি দীর্ঘমেয়াদি জটিল কাজ কোনো সুনির্দিষ্ট বাহিনী, সংস্থা ও ব্যক্তির পক্ষেও সম্ভব না। এজন্য সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, শুধু যে ধর্মীয় উন্মাদনার কারণে সহিংস উগ্রবাদের ঘটনা ঘটছে তা কিন্তু নয়। নানা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য ও মূল্যবোধ এরকম নানান বিষয় এর সাথে জড়িত। কী কারণে আমাদের তরুণরা সহিংস উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে তা নিয়ে অনুসন্ধান ও গবেষণাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, তরুণরাই বেশি সহিংস উগ্রবাদে ঝুঁকে। আর ক্ষতি পুরো জাতির। কোনো শিক্ষার্থী যাতে উগ্রবাদে না জড়ায়, সেজন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দরকার পরিবারভিত্তিক মনস্তাত্ত্বিক শিক্ষা। এরপর সামাজিক পরিবেশ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে উগ্রবাদ ও মনস্তাত্ত্বিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। এই ক্ষেত্রে সিসার্ফ সচেনতামূলক কাজটিই করতে চায়। যে কাজগুলো মানুষকে জঙ্গিবাদে নিয়ে যায় সিসার্ফ ‘ঢাকা পিস টক’ এর মাধ্যমে সেগুলো শনাক্ত করবে ও সমাধানের পথও দেখাবে।