ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সময় নির্ধারণ নিয়ে আপত্তি তুলেছে পাকিস্তান। একই সঙ্গে যেদিন কর্তারপুর করিডোর উদ্বোধনের মতো আনন্দঘন আয়োজন করা হয়েছে সেদিন অন্যদের অনুভূতির কথা বিবেচনা না করে রায় দেয়ার দিন নির্ধারণ গভীরভাবে বেদনাহত করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিকে। তিনি এক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেছেন। কিন্তু পাকিস্তানের এই বক্তব্যকে অনাকাঙ্খিত ও ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করেছে ভারত। ভারত বলেছে, ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইসলামাবাদের ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়ার প্রবণতা স্পষ্ট, যা নিন্দনীয়।
ভারতের অযোধ্যায় অবস্থিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ উগ্রপন্থি হিন্দুরা ১৯৯২ সালে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি হয়। তাতে বহু মানুষ নিহত হন। তার আগে থেকেই এই মসজিদকে কেন্দ্র করে বিরোধ ছিল মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে।
ফলে এ দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনার ব্যারোমিটার হয়ে ওঠে বাবরি মসজিদ। নানা ঘটনার পর ৯ই নভেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এ নিয়ে মামলার চূড়ান্ত রায় দেয়। তাতে বাবরি মসজিদের স্থানকে রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেয়া হয়। অন্যদিকে, বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলিমদেরকে ৫ একর জমি দান করার নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারকে। এ নিয়ে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। ইস্যুটি যেহেতু ধর্মীয় বিষয়কে কেন্দ্র করে তাই বিশ্বের সব হিন্দু ও মুসলিম এর ওপর সতর্ক নজর রাখেন। একই কাজ করে পাকিস্তানও। রায় ঘোষণার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি ওই প্রতিক্রিয়া দেন।
ওদিকে ৯ই নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভীশ কুমার। তিনি বলেন, নাগরিক ইস্যুতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছেন তা নিয়ে পাকিস্তান যে অনাকাঙ্খিত ও নিন্দনীয় মন্তব্য করেছে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি। এ ইস্যুটি পুরোপুরি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ইস্যুটি আইন শৃংখলা এবং সব ধর্ম বিশ্বাসীদের প্রতি সমান সম্মান সম্পর্কিত একটি বিষয়। এতে তাদের মাথা ঘামানোর কিছু নেই। তাই পাকিস্তানের বোধগম্যতায় যে ঘাটতি আছে তাতে বিস্মিত হওয়ার মতো কিছু নেই। আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করছে তারা, এ বিষয়টি স্পষ্ট। তাদের এ আচরণ নিন্দনীয়।