বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কয়েক ঘন্টার কলকাতা সফরে সৌহর্দ্যরে এক নতুন বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তিস্তা নিয়ে বিরোধ সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেখ হাসিনার আপ্যায়ণে সবসময় ব্যস্ত থেকেছেন। আসলে আপা হাসিনার প্রতি বোন মমতার ভালবাসার কথা দু’জনেই বিভিন্ন সময়ে স্বীকার করেছেন। আর তাই তো ইডেন গার্ডেনে সবসময় ব্যস্ততা থাকা নিয়ে হাসিনা মমতাকে বলেন, তুমি এতো ছটফট করো কেন? সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াও। এক জায়গায় বসতে পারো না। এ কথা শুনে সহাস্য মমতা স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন, সব সময়ই মনে হয় কিছু কাজ করি। এক জায়গায় বসে থাকতে পারি না। আসলে কি ক্লাব হাউসে অতিথিদের দেখভাল, কিম্বা মধ্যাহ্ন ভোজে সকলকে আপ্যায়িত করতে মমতা ছুটে বেড়িয়েছেন।
একসময় মধ্যাহ্ন ভোজে হাসিনার কাছে গিয়ে বলেছেন, দেরি হয়ে যাচ্ছে, খেয়ে নিন।
আবার পরক্ষণেই ছুটে গিয়েছেন অন্য অতিথিদের কাছে। অবশ্য মমতার ছুটে বেড়ানোটা অভ্যাস। এমনকি জনসভাতেও মমতা মাইক্রোফোন হাতে মঞ্চের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটে বেড়ান। শুক্রবার ইডেনে মমতা হাসিনার সঙ্গে অনেকটা সময় গল্প করে কাটিয়েছেন। এই সময় হাসিনা মমতাকে কখনো আপনি, কখনো তুমি বলছিলেন। তখন মমতা আপা হাসিনাকে বলেছেন, আমাকে আপনি বলবেন না। ইংরেজিতে তো শুধু ইউ। আমাদের বাংলায় আপনি, তুমি দু’টো শব্দই আছে। তুমিটা অনেক আপন। আমাকে তুমিই বলবেন। এরপরেই হাসিনা মৃদু হেসে কাছে টেনে নিয়েছেন মমতাকে। এই ধরণের অন্তরঙ্গ আলোচনা হয়েছে অনেক সময় ধরে। এদিন সন্ধ্যায় তাজ বেঙ্গল হোটেলেও ছিল সৌহার্দ্যরে পরিবেশ। আর এই সুযোগেই পশ্চিমবঙ্গের জন্য মমতা কি কি কাজ করেছেন তার উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, নানা সামাজিক প্রকল্প চালুর কথা। এই প্রসঙ্গেই উঠেছে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের সাইকেল প্রদানের কথা। মমতা হাসিনাকে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে সাইকেলের চাহিদা প্রচুর। সেই সুযোগটা নিতে পারে বাংলাদেশের শিল্পোদ্যোগীরা। তারা সীমান্ত এলাকায় সাইকেল তৈরির কারখানা তৈরি করলে রাজ্য সরকার জমি দিতেও তৈরি বলে জানিয়েছেন।