ইরান-মার্কিন সম্পর্ক যুদ্ধের আবহে যখন তছনছ হয়ে গিয়েছে, তখন ভারতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর। আর সেই সফরকালে দিল্লিতে প্রবল সহিংসতা। যার অগ্নিগর্ভ চেহারা কেড়ে নিয়েছে ৪৬টি প্রাণ। সে সহিংসতার ঘটনাকে ভারতীয় মুসলিমদের ওপর পরিকল্পিত সহিংসতা বলে উল্লেখ করে ভারতের ‘বন্ধু দেশ’ ইরান ফুঁসে উঠেছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ এক টুইটে ভারতকে ‘বন্ধু দেশ’ আখ্যা দিয়েও দিল্লি ঘটনা নিয়ে তুমুল সমালোচনা করেছেন। যে টুইট ভারত-ইরান সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
টুইটে তিনি দিল্লির ঘটনা নিয়ে লেখেন, ‘পরিকল্পিতভাবে ভারতীয় মুসলিমদের ওপর সহিংসতার যে স্রোত বইছে তার নিন্দা করছে ইরান। বহু দশক ধরে ইরান ভারতের বন্ধু। আমরা ভারতীয় প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাব যাতে সমস্ত ভারতীয়ের ভালো হয়, তার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য…।’
এদিন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে, ‘অবিবেচকের মতো ভারতে গলা টেপা চলছে, যা ছড়ানোর আগে বন্ধ করতে হবে।’ ভারত সরকারকে তিনি শান্তি ও আইনের রাস্তায় চলার কথাও বলেন নিজের টুইটে।
উল্লেখ্য, ইরানের সাথে এখনো পর্যন্ত সেভাবে ভারতের খারাপ সম্পর্ক দেখা যায়নি, এযাবৎকালে। তবে দিল্লি পরিস্থিতির পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টুইট নিঃসন্দেহে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, দিল্লি সহিংসতা নিয়ে প্রথমেই পাকিস্তান সোচ্চার হয়ে হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে। সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অভিযোগ করেন ভারতের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। এরপর একই সুরে সুর মেলায় তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া। আর তারপর দিল্লির ঘটনার নিন্দা জানালো ইরান।
ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ড প্রধান কাসেম সুলাইমানিকে কয়েকমাস আগেই ড্রোন হামলায় হত্যা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ইরান ফুঁসে উঠে ইরাকে মার্কিন সেনার উপর মিসাইল হামলা চালায়। দেখা দেয় যুদ্ধের আবহ। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত সফরে এসে মোদির ভূয়সী প্রশংসা করে যান। আর আহমেদাবাদে ট্রাম্পের সভা ঘিরে যখন গোটা দেশের মিডিয়ার ফোকাস বাড়ছিল, তখন দিল্লি জ্বলেছে সহিংসতার আগুনে। এমন ঘটনা পরম্পরার পর ইরানের ভারতের সমালোচনামূলক বার্তা রীতিমতো গুরুত্ব পাচ্ছে কূটনৈতিক আঙিনায়।
সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া