গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৯ জনকে পরীক্ষা করার পরও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি । ইতোমধ্যে দেশের ৭টি সেন্টারে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কিন্তু ঢাকা ছাড়া অন্য কোথাও কেউ টেস্ট করতে কেউ আসেননি বলে অনলাইন প্রেসব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে। রোববার অবশ্য অনলাইন ব্রিফিং শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
বরাবারের তো আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক সেব্রিনা ফোরা করোনা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করেন। নতুন কেউ আক্রান্ত না হওয়ায় বাংলাদেশে মোট কনোনা আক্রান্ত ৪৮ জনই। এর মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, ১৫ জন সুস্থ হয়ে গেছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, আমাদের কাছে ইতোমধ্যে ২৫০টি ভেন্টিলেটর চলে এসেছে এবং আরো সাড়ে তিনশ’ ভেন্টিলেটর আসবে। অনেক বড় বড় দেশে এসব সুবিধা নেই কিন্তু আমরা ব্যবস্থা করেছি। আমাদের অনেকগুলো পিসিআর (করোনা টেস্ট করার মেশিন) মেশিন রয়েছে। করোনার আগেই এগুলো নিয়ে এসেছিলাম।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। চীনে করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে গত জানুয়ারি থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আমাদের পরিস্থিতি যে কোনো উন্নত দেশের চেয়ে ভাল। এখানে করোনার রোগী পাওয়া যায়নি, এটা খুশির সংবাদ। বিভিন্ন জন প্রশ্ন করেন দেশে করোনা রোগী এতো কম কেন? আমি বলতে চাই, করোনা রোগী বেশি হলে কি আপনারা খুশি হবেন? আমরা ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তিন লাখ পিপিই বিতরণ করেছি। আরো পাঁচ লাখ পিপিই আসবে। প্রতিদিন দেশে ৩০ হাজার পিপিই তৈরি হচ্ছে।
মন্ত্রী নিজে কোয়ারেন্টিনে আছেন কি না এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি আক্রান্ত নই, আমি নিজে কাজ করছি। যেভাবে অন্যরা আছে, আমি নিজে সেভাবেই আছি। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি বড় মন্ত্রণালয়। এখানে প্রতিদিন অনেক মানুষ আসেন। ফলে কোনো কোনো কর্মকর্তা আক্রান্ত হতেই পারেন। ঢাকার বাইরে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর মেশিন পর্যাপ্ত নেই কেন এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ঢাকার বাইরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোতে প্রতিটিতে ১০টির মতো আইসিইউ রয়েছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দিয়েছি কমপক্ষে তিনটি আইসিইউ পৃথক করে রাখার জন্য যেন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া যায়। করোনা চিকিৎসার জন্য ঢাকাতেই ১০ থেকে ১৫টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।
তেজগাঁও-এ আকিজ গ্রুপের একটি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থানীয়রা ভেঙ্গে দিয়েছে এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসায় সহায়তা করতে বেসরকারিভাবে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। আকিজ গ্রুপ যদি ভবন তৈরি করে দিতে চায় এবং কারো আপত্তি না থাকলে সেখানে করোনা চিকিৎসা হলেতো কোনো সমস্যা নেই।
বেসরকারি হাসপাতালে পিপিই দেয়া হচ্ছে না মর্মে প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, বেসরকারি হাসপাতালে পিপিই দেয়ার দায়িত্ব সরকারের নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পিপিই নিজেরাই কিনে নিতে পারে। খিলগাঁও কবরস্থানে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের মৃত্যু হয়েছে এমন একটি লাশ দাফন করতে দেয়া হয়নি, লাশবাহী গাড়ির সাথে একজন ড্রাইভার ও একজন ওয়ার্ডবয় ছাড়া কেউ আসেনি। আইইডিসিআর বলেছে, তাদের তত্বাবধানে করোনা আক্রান্তদের লাশ দাফন করার ব্যবস্থা করা হয় কিন্তু এখানে এর কিছুই দেখা যায়নি। এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, লাশ দাফনের একটি প্রটোকল আছে। সে অনুযায়ী লাশ দাফন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, আজ (রোববার) ও কাল (শনিবার) কোনো নতুন করোনার রোগী শনাক্ত হয়নি। যখন যেখান থেকে টেস্ট করার কথা বলা হয়েছে আমরা টেস্ট করছি। কক্সবাজারে টেস্ট করার ব্যবস্থা করা হলেও সেখানে এখন পর্যন্ত টেস্ট করার জন্য কেউ আসেনি।