নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমানে পৃথিবীতে ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক যে দেশের গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রিত হয় সেই দেশ বাংলাদেশ। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে শুধু নিয়ন্ত্রন করেই ক্ষান্ত হয়নি বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তাদের দলের পেটুয়া বাহিনীর হাতে গত ১৪ বছরে অর্ধশত সাংবাদিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। আর গুম, নির্যাতন ও হেনস্থার শিকার হয়েছেন হাজার হাজার সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মী। এসব কথা বলেছেন গত সোমবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল (ইআরআই) কর্তৃক লন্ডনে আয়োজিত ‘বাংলাদশেরে গণ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ’ র্শীষক এক সেমিনারে বক্তারা।
ইআরআইয়ের সেক্রেটারী নউসিন মোস্তারী মিয়া সাহেবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মাহবুব আলী খানশুুূর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তরুন আইনজীবী এডভোকেট সাইফুর রহমান , দৈনিক আমাদের সময়ের সাবেক ক্রাইম রিপোর্টার হাসান আল জাভেদ ও বাংলাদেশের প্রথম সারির নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের সাবেক সিনিয়র রিপোর্টার সাহেদ শফিক।
সেমিনারে বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের উপর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের আক্রমন, হত্যা ও গুমের চিত্র তুলে বক্তব্য রাখেন ইআরআইয়ের সহ সভাপতি রোকতা হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ, সহকারী সম্পাদক মোঃ ওসমান গনি, যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ ফাহিদুল আলম, সহ সভাপতি কাজী মোঃ নুরুজ্জামান, সহকারী সম্পাদক মোঃ ফজল আহমদ, নির্বাহী সদস্য মোঃ ওহিদুজ্জামান রুমো, ওমর ফারুক, মোঃ শামিমুল হক, ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনালের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ বদরুল ইসলাম, এনবিসিইউকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইশতিয়াক হোসাইন, জাস্টিস ফর ভিক্টিমস অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইন প্রমুখ।
হাসান আল জাভেদ বলেন, অগণতান্ত্রিক আওয়ামী সরকার তাদের ধারাবাহিক লুটপাট, দুর্নীতিকে ঢাকতে কয়েকটি গণমাধ্যম বন্ধ, সংবাদকর্মীদের চাকরিচ্যুত, সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন ও জুলুম চলে আসছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গণমাধ্যম কর্মীদের টুঁটি চেপে ধরছে। গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পূনরুদ্ধারে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।
সাইফুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের জন্য পৃথিবীর অন্যতম কঠোর আইন। সবশেষ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ ধাপ পিছিয়ে ১৬২তম হয়েছে। এজন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাংবাদিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার।
বাংলা ট্রিবিউনের সাহেদ শফিক বাংলাদেশে সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে ক্ষমতাসীন দলের আক্রমন ও মামলার নিজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকার নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে নিজেদের সমালোচনামূলক সংবাদ প্রচারে বাধা দিচ্ছে। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত দেশের গণতন্ত্র ও জনগন মুক্তি পাবে না।
নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকের সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হুসেন বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার গত ১০ বছরে ৩০ জন সংবাদ কর্মীকে হত্যা করেছে এবং অনেককে গুম করেছে। গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নির্যাতন, গুম ও হত্যা করার মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করছে ।
মোঃ ওসমান গনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ তাদের দুর্নীতি,গুম ও খুন প্রকাশ করার কারনে সংবাদিকদের উপর সরকার নির্যাতনের রোলার চালাচ্ছে। অগণতান্ত্রিক ও ভোট চুরির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম দুটোকে হত্যা করে। তাদের হাত থেকে দেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের বাক স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রন করতে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের মতো কালো আইন করেছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রন করার পর সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করতো সেটাও এখন বন্ধ করেছে ওই কালো আইন দিয়ে।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আমিনুল ইসলাম মুকুল, মোহাম্মদ মাসউদুল হাসান, মানবাধিকার কর্মী ফারুক ইসলাম, হুমায়ুন আহমেদ মোঃ সাইফুর রহমান, আবু জাফর আব্দুল্লাহ, মো: লিটন আলী মোল্লা, আল আমিন, আব্দুল আলীম, মোঃ এমদাদুল হক, সায়েম আহমদ, ফেরদৌসী আক্তার রুনা, মোঃ ফজল আহমেদ, হুমায়ুন আহমদ, হৃদয় ঘোষ, মোঃ বদরুজ্জামান, এমদাদুর রহমানু, মোঃ তানভীর আহমেদ, মোঃ শামিমুল হক, সালেহ হোসাইন, হাবিবুর রহমান, মোঃ লিটন আলী মোল্লা, তাহমিনা আক্তার, মোঃ বিলায়েত খান, আহমেদ আলী, বুরহান উদ্দিন, জহুরুল ইসলাম, হানিফ রাব্বানী, মিজানুর রহমান মাসুম প্রমুখ।