নিজস্ব প্রতিবেদক
বৃষ্টি উপেক্ষা করে দ্বিতীয় দিনের মতো লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর হোটেলের সামনে দিনভর বিক্ষোভ করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে পাঠানোর দাবীতে প্রবাসের মাটিতে বৃহৎ এ সংগঠন বিক্ষোভ এবং কালো প্রতাকা প্রর্দশন করে। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে নেতাকর্মীরা কালো পতাকা, প্ল্যাকার্ডসহ ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে পার্লামেন্টের সামনের পার্কে জড়ো হতে থাকেন।
সেখান থেকে মিছিল সহকারে দুপুর দেড়টায় সেন্ট জেমস কোর্ট এলাকার তাজ হোটেলের সামনে আসে। বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন তাজ হোটেলের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন, ঠিক তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পাল্টা স্লোগান শুরু করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিপুল সংখ্যক মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় দেওয়ান আব্দুল বাসিত, যুক্তরাজ্য যুবদলের সহ-সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতাদের দিকে ডিম নিক্ষেপ করেন। পরে আরো একটি ডিম নিক্ষেপ করতে গেলে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর হোটেলের সামনে ও রাস্থার মাঝে প্রায় অর্ধশত পুলিশ সতর্ক অবস্থান নেয়। দিনভর টানটান উত্তেজনা আর মুহুর্মুহু স্লোগানে উত্তাল হয়ে পড়ে হোটেল ও আশপাশ এলাকা। উত্তেজনার মাধ্যদিয়ে লন্ডনে ৪ দিনসহ ১৬ দিনের সফর শেষ হয় প্রধানমন্ত্রীর।
এসময় যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক বলেন, নিশি রাতের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন ও আমাদের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে পাঠানোর দাবীতে আমাদের এ বিক্ষোভ।
আমরা পরিস্কার জানিয়ে দিতে চাই, আর কখনও নিশি রাতে ভোট ডাকাতির সুযোগ দেয়া হবে না। আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে আর কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিলে আমরাও বসে থাকবো না, আমাদের কাছে রেন্টুর লেখা বই রয়েছে, আমরা সব জানি। তিনি বলেন,অনতিবিলম্বে বিএনপির নেতা এম ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ সকল গুম হওয়া নেতাকর্মীদেক ফিরিয়ে দিতে হবে, নইলে এর পরিণামের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ সময় আর বেশি বাকি নেই।
যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ বলেন, আমাদের মা বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন শেখ হাসিনা, এটা কোনো সুস্থ মানুষ দিতে পারে না।কারণ উনার মাথা এখন ঠিক নাই, ক্ষমতা চলে যাওয়ার ভয়ে উল্টাপাল্টা বলছেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন,তাঁর(প্রধানমন্ত্রীর) বয়স কত হয়েছে? নভেম্বরের ভিতরে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। না হলে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানো হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবদল নেতা মোঃ আব্দুল আলিম, এ এ ওয়াহিদুল ইসলাম, ইরফানুল আলম নিশান, মোঃ তরিকুল ইসলাম, মোঃ আনোয়ারুল আমিন, সায়েম আহমদ, আবু জাফর আব্দুল্লাহ, তাহমিনা আক্তার, আজিজুল রহমান, মোঃ জুনায়েদ বোগদাদী, আবু সালেহ মোঃ মহিবুল্লাহ, মোঃ সাইফুর রহমান, মোঃ জসিম উদ্দিন, মিলন আহমেদ, মোঃ সেলিম, মোঃ বদরুল ইসলাম, মোঃ ফাহিদুল ইসলাম, নিয়াজ মোর্শেদ, আজিজুল রহমান, মোছা ইমা বেগম, রাফসান জামিল, মোহাম্মদ জাহিন, আবদুল কাদির জিলানী, আলী হোসাইন, মোঃ মোর্শেদ আলম । এতে আরো উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’র সভাপতি মুসলিম খান , মোঃ আসাদুল হক, মোঃ আলী হোসাইন, ফাইট ফর রাইটের সভাপতি মোঃ রায়হান উদ্দিন, শেখ আবদুল্লাহীল রাব্বি, আমিনুল ইসলাম সফর, মোহাম্মদ বদরুল ইসলাম, হিউম্যানিটি ক্লাব ইউরো বাংলা সভাপতি মোজাক্কের হোসেন, মোঃ ইউসুফ আল আজাদ, সাইদুজ্জামান তারেক, মো. মাহফুজুর রহমান, মো. রায়হান ভূইয়া অন্তর প্রমুখ।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট (বিজি-২০৮) আজ লন্ডন সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ছাড়েন।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। ফ্লাইটটি ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী’ সাথে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নির্বাচনকালীন বেশ কিছু নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী, এসময় তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের শূন্যপদ পূরণ করতে বলেন।
যাওয়ার সময় তিনি বাহিরে অপেক্ষামান নেতাকর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এসময় সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান, মারুফ আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক মাসুক ইবনে আনিস, দপ্তর সম্পাদক শাহ শামীম আহমদ প্রমূখ।