নিজস্ব প্রতিবেদক :
২৮ অক্টোবরের নৃশংস ঘটনার হুকুমদাতা এবং নেতৃত্ব প্রদানকারীদের বিচার হওয়া উচিত আন্তর্জাতিক আদালতে। দাবী ই আর আইয়ের সেমিনারে বক্তারা।
আওয়ামীলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠের নেতা কর্মীদের হাতে নানানভাবে নির্যাতনের স্মৃতি তুলে ধরে উক্ত সেমিনারে বক্তারা বলেন, ২০০৬ সালের এই দিনে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলংকজনক অধ্যায় রচিত হয়। এমন দিনে বর্তমান ক্ষমতাশীল দলের দলীয় নেতা কর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে প্রকাশ্য দিবালোকে লগি-বৈঠা দিয়ে তরতাজা তরুণদের পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে নারকীয় উল্লাস চালিয়েছিল। সবচেয়ে বড় মানবতা বিরোধী অপরাধ এদিনই সংগঠিত হয়েছিল।
২৮ অক্টোবর শনিবার পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্তোরার লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল বা ইআরআইয়ের উদ্যেগে আয়োজিত “রেট্রোস্পেকশন অফ অক্টোবর ২০০৬ : শেখ হাসিনা এ ডিক্টেটর অফ দি সাউথ ইস্ট” বা ২০০৬ এর অক্টোবরের অতীত দর্শন এবং পূর্ব এশিয়ার স্বৈরাচার হাসিনার উত্থান” শিরোনামে উক্ত সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনটির সহ সভাপতি কাজী নুরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নওশীন মোস্তারী মিয়া সাহেব ও সহ সভাপতি মোঃ ওসমান গনির যৌথ পরিচালনায় উক্ত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদুল হাসান, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ফাহিদুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক আহমদ আলী, সহ সভাপতি এস এম রেজাউল করিম,যুগ্ম সম্পদক হুমায়ুন আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াজ কাওসার, ফেইথ এন্ড কমিউনিটি সম্পাদক ফখরুল মিয়া, মাইনোরিটি সম্পাদক মোঃ লিটন আলী মোল্লা, সহকারী সম্পাদক সোহেল আহমদ, সহকারী সম্পাদক আশরাফুল আলম, সহকারী সম্পাদক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক মমিনুল ইসলাম, মানবাধিক কর্মী ও যুবদল নেতা মোঃ কামরুল হাসান রাকিব প্রমুখ।
উক্ত সোমিনারে বক্তারা বলেন, ২৮ অক্টোবরের পৈশাচিকতার বিচার হওয়াতো দূরের কথা, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলাই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তাই উক্ত সোমিনার থেকে এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন ২৮ অক্টোবরের পৈশাচিকতা ছিল নজীরবিহীন। যারা এর সাথে জড়িত তাদের বিচার অবশ্যই হওয়া উচিত। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত জাতি কলংক মুক্ত হবে না।
এ সময় বক্তারা আরো বলেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সেদিন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের উপর পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। লগি, বৈঠা, লাঠি, পিস্তল ও বোমা হামলা চালিয়ে যেভাবে মানুষ খুন করা হয়েছে তা মনে হলে আজও শিউরে ওঠে সভ্য সমাজের মানুষ। সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ মেরে লাশের উপর নৃত্য উল্লাস করার মতো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের হৃদয় নাড়া দিয়েছে। জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব থেকে শুরু করে সারাবিশ্বে ওঠে প্রতিবাদের ঝড়।
ইআরআইয়ের সাধারণ সম্পাদক নৌশিন মোস্তারী মিয়া সাহেব বলেন, আওয়ামীলীগ নেত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনার তিন দিন আগে ২৫ অক্টোবর বক্তব্যে দলের নেতাকর্মীদের উস্কানি দিয়ে লগি বৈঠা নিয়ে জামায়াত-বিনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করার যে বৈধতা দিলো তার সেই হুকুমের জন্যে, মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্যে, অচিরেই তাকে আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদুল হাসান বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাশীল সরকার মূলত ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ২০০৯ সালে সেনা অফিসারদের এবং যুদ্ধপরাধ নামে বিরোধী নেতাদের হত্যা এমন সব একের পর এক নৃশংস হত্যার ঘটনার জন্ম দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
সেমিনারের সমাপনী বক্তব্যে কাজী নুরুজ্জামান বলেন বর্তমান এই ফ্যাসিস্ট সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট সহ নানান কালো আইন প্রণয়ন করে ইতিহাসের ভিলেন হিটলার-গাদ্দাফির মত আজীবন ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। এসব আইন করে, গুম-খুন জেল-জুলুম করে বিরোধীদেরকে নিঃশ্বেষ করা এবং জনগণের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করা।
তিনি আরো বলেন, ৮ অক্টোবরের ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। দেশ ও জাতির স্বার্থেই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন, দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করা প্রয়োজন।
উক্ত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী মাহমুদ হোসেন, আবদুল্লাহ আল۔জাবির, বিথী মৈত্র, কাকলী ইসলাম, তাহমিনা আক্তার, শোহেনা আফরোজ সেবা, আফরিন সুপ্রিয়া, সাবেক ছাত্রনেতা মো: লিটন আলী মোল্লা, মো: হাসান আলী,শাহরিয়া সুলতানা, শাহেদা আক্তার মিতা, হামিদ আলী,মনিরুজ্জামান খান,মো: মারুফ আহমদ, মো: ছাদ মিয়া, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম কবির, সায়েম আহমদ, মোহাম্মদ মাজেদ হোসেন, সাহের আর রহমান, মো: শাহজাহান আহমদ,ফজল আহমদ, মো: মাহফুজ আহমদ,মো: আমিনুল হক, কিবরিয়া আহমদ চৌধুরী,আলী হোসেন, তুহিন আহমদ,আরাফাত মাহমুদ, মো: আমির রহমান, এস এম রেজাউল করিম,নাদিয়া ফাতেমা প্রমুখ।