নিজস্ব প্রতিবেদক
ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী সকল করিডোর চুক্তি বাতিলের দাবিতে মানবাধিকার সংগঠন ইক্যুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল (ইআরআই) উদ্যোগে ৮ জুলাই যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাও ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি ও মানবাধীকার কর্মীরা অংশ নেন।
সোমবার, লণ্ডন সময় দুপুর ১. ৩০ টা থেকেই সাউথ কেনসিংটনের কুইন্সগেটে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঢল নামে। করিডোর চুক্তি মানি না, মানবো না। সকল করিডোর চুক্তি বাতিল করতে হবে। বাংলাদেশে ভারতীয় আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। ইত্যাদি শ্লোগানে শ্লোগানে গোটা হাইকমিশন এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। এসময় হাইকমিশন গুন্ডা লেলিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ পন্ড করার চেষ্টা করলে প্রবাসী মানবাধীকার কর্মীরা একযোগে প্রতিরোধ করেন। প্রবাসীদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যান।
ইআরআইয়ের সাধারণ সম্পাদক নৌশিন মোস্তারী মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের যৌথ সঞ্চালনায় উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি মো: রোকতা হাসান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘আমার দেশ ইউকে’র নির্বাহী সম্পাদক অলিউল্লাহ নোমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘অখণ্ড বাংলাদেশ আন্দোলন’ এর আহবায়ক ও ‘দ্যা গ্রেট বেঙ্গল টুডে’ এর প্রধান সম্পাদক হাসনাত আরিয়ান খান।
প্রধান অতিথি ‘আমার দেশ ইউকে’র নির্বাহী সম্পাদক অলিউল্লাহ নোমান বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বাংলাদেশের অনেক অমীমাংসিত বিষয় সমাধান না করে নতুন করে এই চুক্তি করে মূলত বাংলাদেশকে ভারতের হাতে দিয়েছেন। তিনি ভারতের সহায়তায় অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলে রেখে ভারতকে সব লিখে দিচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি শেখ হাসিনা ভারত সফরে দেশটির সাথে ২টি নতুন চুক্তি, ৫টি নতুন সমঝোতা ও ৩টি চুক্তি নবায়নসহ ১০টি চুক্তি সমঝোতা স্বাক্ষর করেছেন। আমাদের বন্দর, সড়কপথ ভারতকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন রেল করিডোর দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ পুরো দেশটাই অলিখিতভাবে ভারতের হাতে দেওয়া হচ্ছে। বিনিময়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকবেন দেশের মানুষের অধিকার হরণ করে।
বিশেষ অতিথি ‘অখণ্ড বাংলাদেশ আন্দোলন’ এর আহবায়ক ও ‘দ্যা গ্রেট বেঙ্গল টুডে’ এর প্রধান সম্পাদক হাসনাত আরিয়ান খান বলেন, বাংলাদেশের অনৈতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতিতে বরাবরই ইমম্যাচিওরড ছিলেন। এখন তিনি আরো বেশি ইমম্যাচিওরড। তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। ‘র’-এর লোকেরা তাঁর দেখাশোনা করতেন। ভারত সরকার তাঁর পরিবারের খরচ দিতেন। একারণে ১৯৮১ সালে দেশে পা রাখার প্রথম দিন থেকেই তিনি ভারতের সেবাদাসী হিসেবে কাজ করে আসছেন। শেখ হাসিনা নিজ মুখে বলেছেন, ভারতকে যা দিয়েছি, ভারত সারা জীবন মনে রাখবে। দেশের জনগণকে না জানিয়ে ভারতকে দেয়ার অধিকার তাঁকে কে দিয়েছে? ভারত একটা তাবেদার সরকারকে অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখে বিগত ১৫ বছরে একে একে একতরফাভাবে তাদের সকল স্বার্থ হাসিল করে নিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ইআরআইয়ের সহসভাপতি মোঃ রোকতা হাসান বলেন, ভারত বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে করে রেলের মাধ্যমে তাদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে মালামাল ও যাত্রী বহন করবে। এ ট্রেন বাংলাদেশের কোনো মানুষ ব্যবহার করতে পারবে না। এখানে বাংলাদেশের কারো কোনো প্রবেশাধিকার থাকবে না। হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই এই চুক্তি করেছেন। সুতরাং এ চুক্তি বাতিল করতে হবে।
ইআরআইয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এবিএম আকরাম বলেন, ভারতকে সর্বপ্রকার সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে ভারতের কাছে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ আদায় করতে শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। ম্যান্ডেটবিহীন অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির বহির্প্রকাশ।
ইআরআইয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি তোফায়েল আহমেদ বলেন এই সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ভারতের ওপর নির্ভরশীল করে ফেলেছে। আমাদের সবাইকে এখনই ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে । সেই সাথে সকল দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করতে হবে ।
ইআইআরএর মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক ও ব্লাগার মোছা: শাকিলা শারমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর গদিতে স্থায়ীভাবে বসে থাকার জন্য নরেদ্র মোদী ও হাসিনা যুগল তাদের ব্যক্তি স্বার্থে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ভারত তার স্বার্থে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে মালামাল, অস্ত্র, গোলাবারদ পরিবহন করে বাংলাদশেকে চীন ও মিয়ানমারের আক্রমণের জায়গা করে দিয়েছে।
উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইআইআরএর সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো: গিয়াস উদ্দিন, মাইনোরিটি রাইটস সেক্রেটারি তাহমিনা আক্তার, মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ রনি, অর্থসম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদুল হাসান, নরউইচ বিএনপি নেতা শেখ আশরাফুজ্জামান, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের জয়েন্ট সেক্রেটারি জয়নাল হোসাইন, বিএনপি নেতা প্রভাষক মোঃ নজরুল ইসলাম, ইআইআর এর জয়েন্ট সেক্রেটারি মোঃ মহিবুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি সেক্রেটারি ইমদাদুর রহমান ফাহিম, প্রচার সম্পাদক শাহীন আহমদ, গুম বিষয়ক সম্পাদক খালেদ আহমেদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি একেএম রুহুল আমিন সরকার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কাজী মো: এমদাদ সহ প্রমুখ।
এ ছাড়াও উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি তাম্মাম ইসলাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আব্দুল আলিম, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এবাদুর রহমান, মাইনোরিটি রাইটস সম্পাদক আইনুদ্দিন, ইআরআইয়ের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি ফায়াজুল ইসলাম, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল ওয়াহিদ তালিম, সহকারী সম্পদক ফজল আহমদ, জনসংযোগ সম্পাদক মোঃ মুজাক্কির আলী, সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান, মাইনোরিটি রাইট সেক্রেটারি শাকিল আহমদ তুহিন, ইআরআইয়ের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি ফায়াজুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য সেচ্ছাসেবক দলের জয়েন্ট সেক্রেটারি জয়নাল হোসাইন প্রমুখ।