মিয়ানমারের সামরিক সরকার খ্রিস্টানদের উপর নিপীড়ন চালাচ্ছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানিয়েছেন দেশটির এক খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতা। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিরা গত জুলাই মাসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যের খ্রিস্টান নেতা হাকালাম স্যামসন উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্পকে তিনি বলেন, ‘‘মিয়ানমারের সামরিক সরকারের দ্বারা খ্রিস্টানরা নিপীড়িত ও নির্যাতিত হচ্ছেন।”
সামরিক বাহিনীর কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদও জানান স্যামসন। এটি ‘খুব সহায়ক’ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সপ্তাহখানেক আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী স্যামসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। ‘‘আমার মনে হয়, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ট্রাম্পকে আমার সমর্থনের কথা জানানোয় আমাকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা চলছে,” রয়টার্সকে জানান স্যামসন।
এদিকে, স্যামসনের বিরুদ্ধে মামলার খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মর্গান ওর্টাগাস বলেন, ‘‘এই মামলার মাধ্যমে অন্যায়ভাবে তার বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা চলছে।” স্যামসনকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত হলে তা ‘খুবই উদ্বেগের’ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্যামসন যে অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেছিলেন সেখানে বাংলাদেশের প্রিয়া সাহাও উপস্থিত ছিলেন। তার বক্তব্যও বাংলাদেশে বিতর্ক তৈরি করেছিল।
তিনি ট্রাম্পকে বলেছিলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ (৩৭ মিলিয়ন) সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ‘নাই’ (ডিসঅ্যাপিয়ার্ড) হয়ে গেছে। এখনো সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু মানুষ থাকে। আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। আমার জমি ছিনিয়ে নিয়েছে। কিন্তু কোনও বিচার হয়নি।”
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রিয়া সাহাকে ‘দেশদ্রোহী’ অভিহিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন। আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও।
প্রিয়া সাহাকে গ্রেপ্তার করা হবে কিনা, তা মার্কিন প্রশাসন জানতে চেয়েছিল বলে সেই সময় জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। ডয়েচে ভেলে।