বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ভোট চুরি ও গণতন্ত্র হত্যায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি গণতন্ত্র হত্যার জন্য একটি ট্রফি দিতে হয় এবং সেই সাথে যদি জনগণের ভোট চুরির জন্যও কোনো ট্রফি দিতে হয়, সেই ট্রফি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এই অবৈধ সরকার পাবে এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে। কারণ এই সরকার গণতন্ত্র হত্যাকারী এবং ভোট চুরির জন্য ইতোমধ্যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ট্রফির যোগ্য প্রাপ্য তারা।’
আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম নামক একটি সংগঠনের আয়োজনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তারেক রহমানের সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের সহ-সভাপতি হাজী মোজাম্মেল হক মিন্টু সওদাগারের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষকদল নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, সদস্য শফিকুল ইসলাম শফিক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘২০০৮ সালের পর দেশে কোন নির্বাচন সঠিক হয়েছে? আওয়ামী লীগ ২০০৮ নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন মইন উ আহমেদের কারণে। আরেক নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ না করায়। এবারের নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন যে নির্বাচনের কথা শুনলে সাংবাদিকরা হাসে, বিশ্ববাসী হাসে, দেশের ভোটাররা হাসে। আগের দিন রাতে ভোট হয় রেজাল্ট হয় পরের দিন সন্ধ্যাবেলা।’
সাবেক পাঁচ বারের নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘এই সরকার জনগণের কথা কোনো কিছুই শুনবে না। কারণ তারা একবারও ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। কেন তারা বেগম জিয়াকে মুক্তি দিবেন? সরকারের ভয় তো একটাই বেগম খালেদা জিয়া। যদি তিনি এই মুহূর্তে অসত্য ও মিথ্যা মামলায় জামিনে মুক্ত হন, বাংলাদেশের যে অবস্থা, বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি, এই পরিস্থিতিতে তিনি যদি আন্দোলনের ডাক দেন সেই আন্দোলন প্রতিহত করার শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কিংবা বর্তমান অবৈধ সরকারের নেই। সে কারণে তাদের ভয় বেগম খালেদা জিয়া, সেই কারণে তাদের ভয় তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘আজকে স্পষ্ট ভাষায় এই সরকারকে বলতে চাই, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছিলেন তার কারণ ছিল একটাই। যদি পঁচাত্তরে আপনারা এই সংসদে বাকশাল কায়েম না করতেন এই সংসদে আপনারা যদি চিৎকার দিয়ে না বলতেন কোথায় সিরাজ সিকদার? বাংলাদেশের সকল পত্রিকা যদি বন্ধ না করতেন, তাহলে বাংলাদেশে আজকে এসব ঘটনা ঘটতো না। যারা এসব ঘটনা ঘটেছিল তারা আপনাদেরই লোক।
জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার মূলনায়ক- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমি এ প্রসঙ্গে বেশি কথা বলতে চাই না। শুধু এটুকু বলি- মিথ্যা, বিভ্রান্তকর তথ্য দিয়ে দেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না। আপনারা সরকারি যন্ত্র ব্যবহার করে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছেন।’
সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘এখনো সময় আছে বেগম জিয়াকে মুক্তি দিন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। আন্দোলন আমরা এখনো শুরু করি নাই। শুধুমাত্র আন্দোলন শুরুর একটা বার্তা ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আপনারা দেখেছেন। এই বার্তা যদি আপনারা আওয়ামী লীগ বুঝতে না পারেন, এই জমায়েত এই জনস্রোত যদি আপনারা বুঝতে না পারেন, তাহলে আপনারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আমরা রাজপথে নামবো, আমরা জানি মানববন্ধন করে বেগম জিয়ার মুক্তি হবে না।
ভোটের রাজনীতিতে বিএনপি ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে- ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ফারুক বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনি যখন অসুস্থ ছিলেন আপনার জন্য অনেক দোয়া করেছিলাম। আপনি বেঁচে থাকুন। আপনি বেঁচে না থাকলে আমরা কার মোকাবেলা করব। আপনাকে মোকাবেলা করবো সামনে। আমার বন্ধু ওবায়দুল কাদের সাহেবকে বলতে চাই, আপনারা তো ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখ রাতে করেন। আপনারা সরকারি যন্ত্র ব্যবহার করে ভোট প্রয়োগ করে থাকেন। তারপরও বিএনপি রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে না।’