তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলটির সাবেক চেয়ারম্যান আহমেদ দাউদওগলু। দলটির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দাউদওগলুকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল এক সপ্তাহ আগে। বিষয়টি নির্বাহী কমিটিতে পাসের অপেক্ষায় ছিল; কিন্তু তার আগেই শুক্রবার তিনি পদত্যাগ পত্র জমা দেন। তুরস্কের ইংরেজী দৈনিক ডেইলি সাবাহ এক রিপোর্টে জানিয়েছে এ খবর।
পদত্যাগের পর রাজধানী আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে একে পার্টির প্রতিষ্ঠাকালীন এই নেতা বলেন, চেয়ারম্যান তাকে দল থেকে বহিষ্কার করছে সেটি দেখে সমর্থকরা যাতে কষ্ট না পায় তাই নিজে থেকেই পদত্যাগ করলেন।
সেপ্টেম্বরের দুই তারিখ একে পার্টির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দাউদওগলু ও সাবেক তিন এমপিকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। বিষয়টি নির্বাহী কমিটিতে পাস হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। শুক্রবার উপরোক্ত চারজনসহ মোট ৬ জন পদত্যাগ পত্র দেন- যাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল দলের শীর্ষ পর্যায়ে।
আহমেদ দাউদওগলু অভিযোগ করেছেন, দলটি তার প্রতিষ্ঠাকালীন নীতি থেকে সড়ে এসেছে। এ সময় ‘দলের দলে সম্ভাব্য একটি ভাঙন রোধে’ গঠনমূলক সমালোচনা করেছেন বলে জানান তিনি।
শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে মতবিরোধের জের ধরে ২০১৬ সালের মে মাসে দাউদওগলু একে পার্টির কেন্দ্রিয় দায়িত্ব থেকে সরে দাড়ান। এরপর গত মার্চের স্থানীয় নির্বাচনে ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার মেয়র পদে দলটির প্রার্থীরা হেরে যাওয়ায় তিনি প্রকাশ্যে দলের কঠোর সমালোচনা করেন। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেরও সমালোচনা করে আসছিলেন তিনি।
অনেক দিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল যে, দাউদওগলু নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চলছেন। সংবাদ সম্মেলনে সে বিষয়ের আভাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন একটি রাজনৈতিক দল গড়ে তোলা ও নতুন পথ চলা আমাদের একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব। জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই এটি করা উচিত’।
২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একে পার্টির চেয়ারম্যান ও দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন দাউদওগলু। এরপর দেশটিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত করা হয়। এছাড়া ২০০২ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রজব তাইয়েব এরদোগানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা এবং ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর আগে গত জুলাইতে সাবেক উপ প্রধানমন্ত্রী আলি বাবাকানও একে পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন। তিনিও নতুন দল করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। বাবাকানের দলের সাথে থাকতে পারেন আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ গুল। দাউদওগলু বাবাকানের দলের সাথে যুক্ত হবেন নাকি নিজে পৃথক দল গড়বেন সেটি স্পষ্ট নয়।