সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাভারের এক নারীর গাছকাটার ভিডিও ব্যাপকভাবে সমালোচিত হওয়ার ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই অভিযুক্ত খালেদা আক্তার লাকী নামী ওই নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে সাভারের সিআরপি রোডের আটতলা ওই বাড়ির ছাদ পরিদর্শনে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সাভার সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ।
গাছ কাটতে বাঁধা দেয়া তরুণী লালমাটিয়া কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া হাবিব জানান, চার ইউনিটের বাড়ির ষষ্ঠ তলার দুটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন তার বাবা আহসান হাবিব। অপর একটি ফ্ল্যাটের মালিক ওই নারী খালেদা আক্তার লাকী। গাছপালার শখ থেকেই তিনি (সুমাইয়া) তার বাড়ির ছাদে ছোট্ট পরিসরে ছাদবাগান করেন। সেখানে বিভিন্ন ফুলের পাশাপাশি শাক সবজির চারাও রোপন করেন তিনি। যা নিয়মিত পরিচর্যা করতেন অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী সুমাইয়া ও তার মা।
‘কিন্তু ওই নারী, তার স্বামী অ্যাডভোকেট সেলিম আল দীন ও ছেলের কাছে ছাদে আামাদের বাগান করার বিষয়টি ভালো লাগেনি। ইতোপূর্বেও তারা এ নিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে গালমন্দ করেছিল। মঙ্গলবার বিকালে আমি ছাদে প্রতিদিনের মতো গাছ পরিচর্যার কাজে এলে ওই নারীকে দা হাতে গাছগুলো কাটতে দেখতে পাই। এতে বাধা দিতে গেলে সে ও তার ছেলেসহ বহিরাগত ৭-৮ জন আমাকে গালমন্দ করে। আমি আকুতি করে প্রতিবাদ করলে ওই নারী আমাকে দা দিয়ে মেরে ফেলতে তেড়ে আসেন,’ বলেন তিনি।
এঘটনার পর সকালে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ওই নারীকে আটক করে নিয়ে যান।
সুমাইয়ার বাবা আহসান হাবিব জানান, তার প্রতিবেশী নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার যে ভাবে গাছ কাটছিল তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে বাধা দেয়ায় তাদের অনেক গালমন্দ করেন অভিযুক্তরা। তবে সকালে প্রশাসনের এমন ভূমিকায় তারা সন্তুষ্ট। এধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান তিনি। তবে ভিডিওতে দা হাতে গাছ কাটতে থাকা ওই নারী খালেদা আক্তার লাকী ঘটনার কথা স্বীকার করে নিজে অনুতপ্ত হয়েছেন বলে দাবি করেন।
লাকি বলেন, যারা তার গাছ কাটার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে তারা তাকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল বলেই তিনি ক্ষোভের বসে এঘটনা ঘটিয়েছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সাভার সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, ফেসবুকে গাছ কাটার ভিডিও সামাজিক ও গণমাধ্যমে ভাইরাল হলে সাধারণ মানুষ তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এছাড়াও গাছ কাটতে বাধা দেয়া ওই তরুণীর বাবা আহসান হাবিব এঘটনায় থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত নারী খালেদা আক্তার অপরাধ স্বীকার করেছেন।
সাভার থানার ওসি এএফএম সায়েদ জানান, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বৃক্ষ নিধন আইনে অভিযুক্ত নারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সূত্র : ইউএনবি