আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতির খরা কেটে গেছে। এক সময় আমরা দুর্বল ছিলাম। এখন আমরা অনেক শক্তিশালী।
তিনি বলেন, কক্সবাজারকে উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। মাতারবাড়ি থেকে শুরু করে কক্সবাজারে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কক্সবাজারকে উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে। সী-বীচকে দেশী বিদেশী পর্যটকদের কাছে আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার শহীদ দৌলত ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিএনপির জোয়ার এখন দিবাস্বপ্ন। তাদের আন্দোলন ও নির্বাচনে ভাটা পড়েছে। জোয়ারের আর দেখা পাবে না বিএনপি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফার সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের ভেদাভেদ ভুলে যান। আপন ঘরে শত্রু থাকলে বাইরের শত্রু দরকার নাই। যেকোনো মূল্যে নিজেদের ঐক্য সুদৃঢ় করতে হবে।
তিনি বলেন, নিজেদের ঘরে আরেকটা ঘর করবেন না। দলকে আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করুন। আমরা একতাবদ্ধ থাকলে কোনো অপশক্তি আমাদের হঠাতে পারবে না।
ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ার করে বলেন, দল ভারী করতে সুবিধাবাদিদের স্থান দিবেন না। দুঃসময়ের কর্মীদের মূল্যায়ন করুন। কমিটি করার বেলায় যেন ত্যাগীদের স্থান হয়। সিনিয়রদের সম্মান করবেন। না হলে একদিন যখন আপনারা সিনিয়র হবেন, তখন জুনিয়রদের সম্মান পাবেন না।
মনে রাখবেন, আওয়ামী লীগ বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। ক্ষমতার অহংকার করবেন না। অহংকার পতনের মূল। বিনয়ী লোকদের সবাই সম্মান করে, ভালোবাসে। সুন্দর ব্যবহার দিয়ে জনগণের ভালোবাসা অর্জন করুন। সেটিই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ।
‘আজকের বাংলাদেশ শেখ হাসিনার কারণে বিশ্বের কাছে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে। আমাদের নেত্রী নিজের পরিশ্রমের গুণে বিশ্বের সেরা শাসকের একজন। তিনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত সৎ। সততায় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের তুলনা হয় না। সেই সাহসেই নিজের দল থেকেই তিনি শুদ্ধি অভিযান শুরু করে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন’, বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের টানা দুইবারের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কক্সবাজারের মানুষ আতঙ্কে আছে। রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গা করে দিয়ে এখানকার মানুষ নিজ ঘরে পরবাসীর মতো। আমরা রোহিঙ্গাদের কারণে চরম সংকটে আছি। পরিত্রাণ চাই।
তিনি বলেন, মানবিক সাহায্য মানবিক সংকট বাড়িয়েছে। যাদের মানবিক সাহায্য করেছি তারা যেন স্থায়ী বোঝা না হয়- মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের উপর দোষ চাপিয়ে পাশ কাটিয়ে যেতে চাচ্ছে মিয়ানমার। আঞ্চলিক ঝুঁকি থেকে আমাদের রক্ষার জন্য মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করতে হবে। তাদের বোঝা আমরা আর সাইতে পারব না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সামবেশে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতবদিয়া) আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, সংরক্ষিত আসনের এমপি কানিজ ফাতেমা আহমদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ, জেলা যুব লীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।