এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার অসুস্থতার মাত্রা বুঝে তার চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই গ্রহণ করবে সরকার। চিকিত্সকরা যদি বলেন বিদেশে নিয়ে তার চিকিত্সার প্রয়োজন, তবে বিএনপি নেত্রীকে সেখানেই পাঠানো হবে।
শুক্রবার ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়া জেলে আছেন বলে তার প্রতি সরকার অমানবিক আচরণ করবে না। বেগম জিয়া অসুস্থ আছেন— এটা বিএনপির মহাসচিব জোর গলায় বলছেন। তার অসুস্থতা কতটা গুরুতর সেটা দেখতে হবে। গুরুতর হলে প্রয়োজনীয় চিকিত্সা সেবা তিনি পাবেন। দেশের চিকিত্সকরা যদি বোর্ড বসিয়ে বলে বিদেশে পাঠাতে হবে, তা হলে পাঠানো হবে।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের হারের জন্য দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, বিএনপি যে কয়টা জায়গায় জিতেছে এক-দুটি ছাড়া বাকি সবগুলো আমাদের বিদ্রোহী প্রার্থী কিংবা দলের অন্তর্কলহের ফলে। আমাদের অন্তর্কলহের ফসলই বিএনপি ঘরে তুলেছে।’ ওই নির্বাচনের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগের প্রতি সুবিচার করছে না অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) একটা পেপারে দেখলাম যে চারটা এলাকায় আমরা হেরেছি একপেশেভাবে শুধু সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ’
কোন্দল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে : সূত্র জানায়, গতকালের বৈঠকে কয়েকজন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলেন, সারাদেশে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যা আগামী নির্বাচনে জয়ের জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই দ্রুত ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা। কোন্দলে জড়িত নেতাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে উপস্থিত নেতারা একমত হন। বিষয়টি আজ শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে ওবায়দুল কাদের দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিদ্রোহী দমনে ব্যবস্থা না নিলে জাতীয় নির্বাচনে ভয়াবহ পরিণতি হবে বলে উল্লেখ করেন। এরপর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহাবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ একে একে সব নেতা তার সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছান। বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছড়াছড়ি ছিল। বহিষ্কার করা হলেও জয়ী হয়ে আসার পরে ওইসব বিদ্রোহীদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়েছে। এগুলো বিদ্রোহী প্রার্থীদের আরো উত্সাহ যুগিয়েছে।