এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির পরদিনই সিরিয়ার বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার হামলার পরপরই পেন্টাগন এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে। সিরিয়ার তিয়াস বিমানঘাঁটিতে ইসরাইলের জঙ্গিবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে সিরিয়া ও রাশিয়া। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার দৌমায় রাসায়নিক গ্যাস হামলার অভিযোগ তুলে আসাদকে ‘চড়া মূল্য দিতে হবে’ বলে হুশিয়ারি দেন ট্রাম্প। এ সময় আসাদকে জানোয়ার বলেও গালি দেন তিনি।
বিবিসি জানায়, সোমবার সিরিয়ার হোমস নগরীর নিকটবর্তী সামরিক বিমানঘাঁটি তিয়াসে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে। বিমানঘাঁটিটি ‘টি-৪’ নামেও পরিচিত। শুরুতে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ফ্রান্সও এ হামলা চালায়নি বলে জানায় দেশটির কর্মকর্তারা। ফ্রান্সের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল প্যাট্রিক স্টেইজার বলেন, ‘আমরা হামলা করিনি।’
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলের দুটি এফ-১৫ জঙ্গি বিমান লেবাননের আকাশসীমা দিয়ে উড়ে এসে সিরিয়ার টি-৪ বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসরাইল আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। তার মধ্যে সিরিয়া পাঁচটি ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়। ইন্টারফ্যাক্সের প্রতিবেদন প্রকাশের পর সিরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা সানা থেকেও প্রায় একই খবর দেয়া হয় বলে জানায় রয়টার্স। অতীতে ইসরাইল বেশ কয়েকবার সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে তিয়াস বিমানঘাঁটিতে হামলার বিষয়ে এখনও তাদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গত বছর সিরিয়ার ইদলিবের খান শেইখৌন শহরে রাসায়নিক হামলার পর যুদ্ধজাহাজ থেকে হোমস প্রদেশের শায়রাত বিমানঘাঁটিতে ৫৯টি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই হামলায় ৬ জন নিহত এবং পুরো বিমানঘাঁটিটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
রাসায়নিক হামলার জবাব দিতেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছেন বলে তখন বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এবারও সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সর্বশেষ শহর দৌমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ উঠেছে। সেখানে অন্তত ৮০ জন শ্বাসরোধ হয়ে মারা গেছে এবং বহু মানুষ শ্বাসকষ্টে ভুগছে বলে জানিয়েছে উদ্ধার ও চিকিৎসা কাছে নিয়োজিত কয়েকটি দাতব্য সংস্থা। দৌমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠার পর রোববার একাধিক টুইটে ট্রাম্প সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদকে ‘জানোয়ার’ বলে গালি দেন। এ অমানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য ‘চরম মূল্য দিতে হবে’ বলে হুশিয়ার করেন ট্রাম্প। ফ্রান্সও একই হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছিল। রোববার ট্রাম্প ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফোনালাপে সিরিয়ায় সন্দেহজনক রাসায়নিক হামলার বিরুদ্ধে ‘কঠোর যৌথ ব্যবস্থা গ্রহণের’ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। এ ঘটনায় তদন্তের পক্ষে মত দিয়েছে চীন।
সিরিয়া ও রাশিয়া শুরু থেকেই দৌমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, হামলার পেছনে আসাদের নাম আসা ‘উসকানিমূলক’।