এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ‘আরও অবনতি হয়েছে’ দাবি করে অবিলম্বে তাকে গুলশানের ইউনাটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “গতকাল বলেছিলাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। এখন তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। তার হাত-পা ও কোমরের ব্যথা আরও বেড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে তার উন্নত চিকিৎসা দরকার।”
কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতার এই খবর কীভাবে জানতে পারলেন- এমন প্রশ্নে রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার আত্মীয়-স্বজনরা কারাগারে গিয়ে দেখা করে এসেছেন। এছাড়া তার আইনজীবীরাও কয়েক দিন আগে গিয়েছিলেন। সেসব মাধ্যমে তারা খবর পাচ্ছেন।
“আর সব সময় সব সোর্সের কথা বলতে নেই। আমরা তো নানাভাবে জানতে পেরেছি। আপনারাও তো কারাগারের খবর রাখছেন, সেভাবেই জানছি।”
রিজভী বলেন, “কোটি কোটি জনগণের পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকে আমি দলের চেয়ারপারসন ও ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে তার পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।
চলতি মাসের প্রথম দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গঠিত মেডিকেল বোর্ড তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। বিএনপি নেতারা খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দেখার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানালে গত ৭ এপ্রিল তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে এক্সরে করানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, সরকারি মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা ‘অর্থোপেডিক বেড দেওয়ার সুপারিশ’ করলেও কারা কর্তৃপক্ষ এখনও তা দেয়নি।
“শুধু তাই নয়। এতদিন সাপ্তাহে একদিন পরিবারের সদস্যদেরকে দেখা করতে দেয়া হত। এখন বলা হচ্ছে ১০ দিন পরপর দেখা করতে হবে।… সরকার আইন কানুন সব কিছু জলাজঞ্জি দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আলাদা বিধান করছে।
“এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাকে নিপীড়ন করা, মানসিক নির্যাতন করা, তাকে বিপর্যস্ত করা, হেনস্তা করা, হয়রানি করা।… কারাগারে যা কিছু হচ্ছে সরকার ও সরকার প্রধানের নির্দেশেই হচ্ছে।”
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গোলাম আকবর খন্দকার, আবদুস সালাম, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।