এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : উত্তর কোরিয়ায় এক গোপন সফর করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক মাইক পম্পেও। শুধু তাই নয় এ সফরে দেশটির নেতা কিম জং আনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। চলতি মাসের শুরুর দিকে পম্পেও এ সফর করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রায় তিন সপ্তাহ পর এ ঘটনা ফাঁস হলেও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের বহু দিনের শত্রু উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শীর্ষ কর্মকতার বৈঠকের ঘটনা খুবই বিরল।
ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথম এ খবরটি প্রকাশ করে। পরে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ খবর নিশ্চিত করেছেন। বুধবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, ধারণা করা হচ্ছে পম্পেও তিন সপ্তাহ আগে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থেকে বিমানযোগে পিয়ংইয়ং যান। এর ক’দিন আগেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে বরখাস্ত করে তদস্থলে নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পম্পেওর নাম ঘোষণা করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে চলতি বছরের মে বা জুন মাস নাগাদ সরাসরি যে শীর্ষ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে তার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে পম্পেওর এ গোপন সফর।
তবে পম্পেওর গোপন সফরের ব্যাপারে হোয়াইট হাউস এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকে পরমাণু শক্তিধর উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কথার যুদ্ধে আবদ্ধ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ফেব্র“য়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় শীতকালীন অলিম্পিকের সুবাদে দেশ দুটির সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করার লক্ষ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের বৈঠকের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিউল।
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তাদের যোগাযোগের ইঙ্গিত ট্রাম্পও দিয়েছিলেন। কিছু দিন আগে তিনি নিজেই বলেন, তার প্রশাসন পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সরাসরি যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সিআইএ প্রধানের এ সফর হচ্ছে, ২০০০ সালের পর এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়র সর্বোচ্চ স্তরের যোগাযোগ।
এদিকে বুধবারের এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানায়, শিগগিরই উত্তর কোরিয়ায় এক সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও। কয়েক সপ্তাহ আগেই কিম নিজেও বেইজিং সফর করে এসেছেন। আগামী সপ্তাহেই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সঙ্গে কিমের এক শীর্ষ বৈঠক হওয়ার কথা এবং একে সামনে রেখেই নানামুখী কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে।
এদিকে দীর্ঘ ৪৮ বছর পর উত্তর কোরিয়ার ‘ফার্স্ট লেডি’র পদ পেলেন সর্বোচ্চ নেতার স্ত্রী রি সোল জু। এর আগে ১৯৭০ সালে সর্বশেষ কিমের বাবা কিম জং ইল তার স্ত্রী কিম সং অ্যা’কে এ উপাধি দিয়েছিলেন। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। কোরিয়া অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক টরি স্ট্যাঙ্গেরনসিএনএন কে বলেন, কোরিয়া সরকার কখনও কোনো সিদ্ধান্ত সুনির্দিষ্ট কারণ ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ছাড়া গ্রহণ করে না।