এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : জমজমাট লড়াই হল।টানটান উত্তেজনায় শেষ পর্যন্ত এগিয়ে চলল খেলা।তবে শেষ হাসি হাসল বাংলাদেশ।দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২ রানে হারাল সাকিব বাহিনী।রোমাঞ্চকর এ জয়ে ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-১ সমতা টানল তারা।
১৭২ রানের জবাবে শুরুটা শুভ হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। স্কোরবোর্ডে ৫ রান তুলতেই সাজঘরে ফেরেন এভিন লুইস। মূল্যবান উইকেটটি তুলে নেন টাইগার পেস সেনসেশন মোস্তাফিজুর রহমান। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে বিধ্বংসী ওপেনারকে ফেরান তিনি। ক্যারিবীয় শিবিরে দ্বিতীয় আঘাতটিও হানেন কাটার মাস্টার। মুশফিকের কটবিহাইন্ডে ফিরিয়ে দেন বিস্ফোরক ব্যাটার আন্দ্রে রাসেলকে। ফলে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মারলন স্যামুয়েলসকে ফিরিয়ে সেই চাপ অব্যাহত রাখেন সাকিব আল হাসান।তাতে বাড়তি পারদ জোগান রুবেল হোসেন।এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান দিনেশ রামদিনকে।
একে একে টপর্ডারের সবাই ফিরলেও টিকেছিলেন আন্দ্রে ফ্লেচার। রোভম্যান পাওয়েলকে নিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটছিলেন তিনি।ধীরে ধীরে ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন।অবশেষে হার মানেন ক্যারিবীয় ওপেনার।নাজমুল ইসলামের দুর্দান্ত ঘূর্ণিতে তালগোল পাকিয়ে সাকিবকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফ্লেচার। তার আগে ৩৮ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৩ রানের সংগ্রামী ইনিংস খেলেন তিনি।পরক্ষণেই ক্যারিবীয় দলপতি কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে তুলে নেন সাকিব। আর শিকড় গেঁড়ে বসা রোভম্যানকে শিকার বানান মোস্তাফিজ। ফেরার আগে ৩৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৩ রানের মারকাটি ইনিংস খেলেন তিনি। মূলত রোভম্যানের বিদায়ের পরই জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ।
পরে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপদান করেন নাজমুল ইসলাম। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তার হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক সাকিব।অক্ষরে অক্ষরে দলপতির আস্থার প্রতিদান দেন এ স্পিনার।এক ঝটকায় ফিরিয়ে দেন নার্স ও পলকে। বাঁহাতি ঘূর্ণি জাদুকরের হিংস্র থাবায় শেষ পর্যন্ত ১৫৯/৯ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজ ও নাজমুল নেন ৩টি করে উইকেট।২ উইকেট ঝুলিতে ভরেন সাকিব।
রোববার ফ্লোরিডার লডারহিলে টস ভাগ্যে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। তবে শুরুতেই হোঁচট খান সফরকারীরা। স্কোরবোর্ডে ৭ রান যোগ হতেই অ্যাশলে নার্সের শিকার হয়ে ফেরেন ওপেনিংয়ে নামা লিটন দাস (১)। আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তন করে ওয়ানডাউনে নামা মুশফিকুর রহিম। সেই নার্সের স্পিন ভেলকিতে রাসেলকে ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল (৪)। ফের ব্যর্থ সৌম্য (১৪)। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই সাজঘরে ফেরত আসেন তিনি। এতে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
একে একে লিটন, মুশফিক, সৌম্য ফিরে গেলেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন তামিম। পরে সাকিবকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন তিনি। তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন অধিনায়কও। একপর্যায়ে জমে ওঠে তাদের জুটি। এতে পথ দেখতে পায় বাংলাদেশ। দলীয় ১৩৮ রানে রাসেলের শিকার বনে ফেরেন তামিম। ফেরার আগে ৪৪ বলে ৬ চারের বিপরীতে ৪ ছক্কায় ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি ড্যাশিং ওপেনারের ষষ্ঠ ফিফটি।
তামিম ফিরলেও থেকে যান সাকিব। চলতেই থাকে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের তাণ্ডব। ইনিংসের ৩ বল বাকি থাকতে হার মানেন তিনি। কিমো পলের বলে মারতে গিয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এর আগে তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৭ম ফিফটি। ৩৮ বলে ৬০ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলার পথে তিনি হাঁকান ৯ চার ও ১ ছক্কা।
শেষ পর্যন্ত ১৭১ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৩ ও আরিফুল হক ১ রানে অপরাজিত থাকেন। ক্যারিবীয়দের হয়ে নার্স ও পল নেন ২টি করে উইকেট।