এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : মালদ্বীপে নির্বাচনের আর মাত্র ৫ দিন বাকি। এরমধ্যেই দেশটির প্রেসিডেন্টের একগাদা দুর্নীতির খবর প্রকাশ পেয়েছে। মালদ্বীপের অর্ধ শতাধিক দ্বীপ ডেভেলপারদের কাছে সরকারি টেন্ডার ছাড়াই ইজারা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন।
বিনিময়ে বিলাসবহুল নানা উপহার ও কোটি কোটি ডলার নিজ পকেটে ভরেছেন তিনি। মাল্টি বিলিয়ন ডলারের এ অর্থ কেলেঙ্কারিতে সরকারের বড় বড় কর্মকর্তারাও প্রেসিডেন্টকে সহায়তা করেছেন।
প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, ডেভেলপারদের সঙ্গে অবৈধ কয়েকটি চুক্তিতেও সরাসরি জড়িত রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা অর্গানাইজ ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টি প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) অর্থ কেলেঙ্কারির এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার হাতে আসা এর একটি কপি অনুসারে এ খবর পাওয়া গেছে।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মালদ্বীপের জাতীয় নির্বাচন। এর ভোটের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো আবারও ক্ষমতায় বসার প্রত্যাশা করছে ক্ষমতাসীন প্রোগ্রেসিভ পার্টির নেতা ইয়ামিন।
তাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) নেতা ইব্রাহিম মোহাম্মদ সালিহ। তবে নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে এ দুর্নীতির খবর প্রকাশে বিপাকে পড়তে পারেন ইয়ামিন।
প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিবের জন্য একটি বিলাসবহুল হোটেল রুমের প্রস্তাব করেছিলেন সিঙ্গাপুরের ধনকুবের ওয়াং বেং সেং। এছাড়া আরও বিলাসবহুল উপহার দিয়েছিলেন তিনি।
বেং সেংয়ের কোম্পানি হোটেল প্রোপার্টিস লিমিটেড (এইচপিএল) মালদ্বীপে কয়েকটি রিসোর্ট পরিচালনা করে। দেশটির আরও কয়েকটি দ্বীপে রিসোর্ট খুলতে প্রেসিডেন্টের দ্বারস্ত হয়েছিলেন বেং সেং। সরকারি কোনো টেন্ডার ছাড়াই তিনি দুটি দ্বীপ প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে ইজারা পেয়ে যান।
এর একটি মাত্র ৫০ লাখ ডলারের বিনিময়ে এবং অন্যটি বিনে পয়সায়। তবে দুর্নীতির প্রতিবেদন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি মালদ্বীপ সরকার।
দেশটির প্রায় ৫০টি দ্বীপ টেন্ডার ছাড়াই ইজারা দিয়েছে ইয়ামিন সরকার। প্রায় দুই ডজন ইজারা চুক্তিতে সহায়তা করেছেন প্রেসিডেন্ট। মালদ্বীপে প্রায় শতাধিক রিসোর্ট রয়েছে। এগুলো প্রায় ৪ দশক ধরে নির্মিত হয়েছে। কিন্তু ২০১৩ সালে ক্ষমতায় আসা ইয়ামিন মাত্র ৫ বছরের মধ্যে আরও ৫০টি রিসোর্ট তৈরির অনুমোদন দিয়েছেন।
মালদ্বীপ সরকারের দুর্নীতির বিষয় সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রকাশ করে আলজাজিরা। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আদিবের তিনটি স্মার্টফোন, কয়েক ডজন অতি গোপনীয় নথিপত্র থেকে এ দুর্নীতির প্রমাণ পায় গণমাধ্যমটি।
রয়েছে গোপনভাবে রেকর্ড করা তিন ব্যক্তির স্বীকারোক্তি। ওই তিন ব্যক্তি লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ও তার ভাইস প্রেসিডেন্টের কথামতো সরবরাহ করেছেন। প্রমাণ পাওয়া গেছে, প্রেসিডেন্টের মন্ত্রী ও সহযোগীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার চুরির ষড়যন্ত্র করেন।