এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : কে বলে বাঙালি ছাড়তে জানে না। ছাড়ে, যখন পেরে ওঠে না তখনই। তবে এ ছাড়ের ক্ষেত্র কখনই পরিবারের বাইরে নয়। এ ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ নিজের পুত্র-কন্যা বা স্ত্রী। এদের মধ্যে কাউকে না পেলে নিকটাত্মীয়দের অগ্রাধিকার।
দলীয় পদ কিংবা ভোটে মনোনয়নের ক্ষেত্রে পরিবার বা নিকটাত্মীয়দের বাইরে ছাড় দেয়ার মানসিকতা দেশের রাজনীতিতে খুবই কম। উত্তরসূরিদের নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করার রেওয়াজ বহুদিন ধরেই চালু আছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের উত্তরসূরিরা এলাকায় নানামুখী কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারাই সংশ্লিষ্ট পদের সম্ভাব্য প্রার্থী। নিজের পরিবারের মধ্যে ছাড় দেয়ার এ মানসিকতায় রাজনীতিতে মেধাবী ও যোগ্যরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশিষ্টজনরা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে রাজনীতিতে বন্ধ্যত্ব সৃষ্টির আশঙ্কা আছে।
জানা গেছে, রাজনীতিতে স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্মীয় পুনর্বাসনকে সুশীল সমাজের অনেকেই নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন। কিন্তু এরপরও দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতিতে সন্তানদের প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি প্রবলভাবে বিরাজমান। যারা রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের বিরোধিতা করতেন তারাও সচেতনভাবে নিজের ছেলে-মেয়েদের রাজনীতিতে সামনের কাতারে নিয়ে এসেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে নিজের আসনটি এখন ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী কিংবা নিকটজনকে আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাইয়ে দিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। যারা প্রয়াত হয়েছেন তাদের ছেলে-মেয়েরা সংশ্লিষ্ট আসনটিকে উত্তরাধিকার হিসেবে পারিবারিক সম্পত্তির মতো দাবি করছেন। এবার যারা অসুস্থতা বা মামলার কারণে নির্বাচন করতে পারবেন না এমন শঙ্কায় আছেন তারাও উত্তরসূরিদের ছাড় দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জানতে চাইলে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম বলেন, রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা না থাকলে মেধাবী ও যোগ্যরা কখনও জায়গা পাবেন না। স্বজনপ্রীতির কারণে রাজনীতিতে বন্ধ্যত্ব সৃষ্টি হবে। যা দেশের জন্য মঙ্গলকর নয়। এটা দেশের জন্য অশনিসংকেত। দলীয় মনোনয়ন কিংবা পদের ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও মেধাকে প্রাধান্য দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ : ছেলে-মেয়ে বা ভাইকে নিজের জায়গায় আনতে চান আওয়ামী লীগের অনেক রাজনীতিবিদ। উত্তরসূরিদের নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করার রেওয়াজ বহুদিন ধরেই চালু রয়েছে দলটিতে। এবারও সে রকম চেষ্টা করে যাচ্ছেন অনেকেই।
এদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, সাবেক ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী, সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী আশিকুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল কুদ্দুস প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুর-২ আসনে ছেলে আয়মন আকবরের মনোনয়ন চান সাজেদা চৌধুরী। অনেকদিন ধরেই তিনি অসুস্থ। ছেলেকে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতিও বানান। পরে অবশ্য মা-ছেলেতে বিরোধ দেখা দেয়। তারপরও এ আসনে সাজেদা চৌধুরী মনোনয়ন না পেলে তিন ছেলে- আয়মন আকবর, সাজেদ আকবর বা শাহদাব আকবরের যে কারও মনোনয়ন চাইবেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগেই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি আর নির্বাচন করবেন না। তার আসন সিলেট-১-এ মনোনয়ন চান তার ছোট ভাই আবদুল মোমেন। এতে অর্থমন্ত্রীর সায়ও আছে বলে বিভিন্ন সূত্র বলছে।
শরীয়তপুর-২ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হয়ে পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি কর্নেল (অব.) শওকত আলী। কিন্তু এখন তিনি বয়োবৃদ্ধ। চলতে-ফিরতে পারেন না বললেই চলে। কিন্তু তারপরও মনোনয়ন চান। তবে, দল বয়সের কারণে তাকে মনোনয়ন না দিতে চাইলে তার আসনে তিনি ছেলে ডা. খালেদ শওকত আলীর মনোনয়ন দাবি করবেন। ছেলেকে ইতিমধ্যে তিনি নির্বাচনী এলাকার রাজনীতিতে ভালোভাবেই পরিচিত করিয়েছেন। খালেদ শওকত সরাসরি দলের পদে না থাকলেও সেখানকার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যদিও মনোনয়ন যুদ্ধে এ আসনে অনেক এগিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম।
পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের এমপি ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু। বার্ধক্যের কারণে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি। তাই তার আসনে ছেলে ঈশ্বরদী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমালকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তিনি। যদিও এখানে নির্বাচন করতে চান তার মেয়ে মেহজাবিন শিরিন পিয়া। এখানে মনোনয়ন চান পিয়ার স্বামী ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুও। মনোনয়ন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে শ্বশুর-জামাই যুদ্ধ। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছেন সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু।
ময়মনসিংহ-৮-এর এমপি ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান। বয়সের কারণে তিনিও আছেন মনোনয়ন ঝুঁকিতে। তার এলাকার স্থানীয় রাজনীতিতে বহুদিন ধরেই কাজ করছেন ছেলে মোহিত-উর রহমান শান্ত। যদিও বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে নিজেই বিতর্কের অপর নাম হয়ে গেছেন এই শান্ত।
নরসিংদী-৫ আসন (রায়পুরা) থেকে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজুর ছেলে রাজিব আহমেদ পার্থ। বাবার আসনে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন পার্থ। এ আসনে মনোনয়ন দৌড়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবীর কাওছার।
নাটোর-৪ আসনে আলোচনায় আছেন বাবা-মেয়ে। এখানে এমপি সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল কুদ্দুস। তার মেয়ে কুহেলী কুদ্দুস মুক্তি ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী। যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি। বাবার আসনে ইতিমধ্যে সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে বহুল পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নিজ আসনের জন্য মেয়েকে প্রস্তুত করছেন আবদুল কুদ্দুস।
ঝিনাইদহ-২ আসনে বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগে সদ্য যোগ দেয়া মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বর্তমান দশম সংসদেরও স্বতন্ত্র সংসদ নির্বাচিত হয়েছেন এবং সম্প্রতি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।
জামালপুর-৫ আসনের বর্তমান এমপি সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা। তার ছেলে মো. সালেহীন রেজা একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে চান। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ তরুণ নেতা এলাকায় ব্যাপক জনসংযোগ করছেন।
রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনের এমপি সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী আশিকুর রহমান। অনেকদিন থেকে এ আসনে তার হয়ে কাজ করছেন বড় ছেলে রাশেক রহমান। ইতিমধ্যে উপজেলায় নিজের অবস্থানও তৈরি করেছেন রাশেক। নিজের আসনে ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান আশিকুর রহমান। যদিও এখানে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকার দলের মনোনয়নের শক্ত দাবিদার।
বিএনপি : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য। রাজনীতিতে ততটা সক্রিয় না থাকলেও তার এ পদ লাভ মূলত পিতার কারণেই বলে বিএনপিতে আলোচনা আছে। জমিরউদ্দিন শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। আগামীতে তিনি নির্বাচন করতে না পারলেও পঞ্চগড়-১ আসনে তার ছেলেকে ছাড় দেবেন।
যশোর সদর আসন থেকে বারবার সংসদ সদস্য হন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এম তরিকুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে অসুস্থ। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অনেক আগেই তার ছেলেকে রাজনীতিতে জায়গা করে দেন। ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। তরিকুল ইসলাম নির্বাচন করতে না পারলে সদর আসন থেকে অমিত নির্বাচন করবেন। সেই প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।
ঢাকা-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য হন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন। এ আসনে তিনি নির্বাচন করতে না পারলেও ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ছাড় দিতে পারেন। ঢাকা ৫ আসনের এমপি ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। এ আসনটি ভাগ হয়ে ঢাকা-৪ ও ঢাকা-৫ দুটি আসন হয়। ৫ থেকে সালাহউদ্দিন নির্বাচন করবেন। ঢাকা-৪ আসন থেকে তার ছেলে তানভীর আহমেদ রবিন নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কুমিল্লা-১ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। কুমিল্লা-২ আসনে তার ছেলে খন্দকার মারুফ হোসেন নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রয়াত হারুনার রশিদ খান মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রিতা এখন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি। বাবার পরিচয়েই মূলত রাজনীতিতে আসেন তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির হয়ে মানিকগঞ্জ সদর আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেন। মুন্নু মারা যাওয়ায় এখন তিনি জেলার সদর আসনের মূল দায়িত্বে আছেন।
বিএনপির সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মাঈনুল ইসলাম খান শান্ত এখন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। বিগত বিএনপি শাসনামলের শেষ দিকে পিতার মারা যাওয়ার পর উপনির্বাচনে কিছু দিনের জন্য এমপিও হয়েছিলেন। পিতার কিছু কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়া ছাড়া ওই সময় শান্তও কখনও রাজনীতিতে ছিলেন না। নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি থেকে ২০০৮ সালে মনোনয়ন পান এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। তিনি সম্প্রতি মারা যান। মারা যাওয়ার আগেই ওই আসনে তার ছেলেকে প্রস্তুত করেন। বর্তমান খসরুর ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমন আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপির এমপি ছিলেন আবদুল আলিম। তিনি মারা যাওয়ায় ওই আসনে তার ছেলে ফয়সল আলীম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে এমপি ছিলেন ডা. আবদুল মতিন। তিনি মারা যাওয়ায় ওই আসনে তার ছেলে ডা. এমএ মুহিত নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নেত্রকোনা-৪ এ এমপি ছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর। বর্তমানে তিনি কারাগারে। তার পরিবর্তে স্ত্রী তাহমিনা জামান নির্বাচন করবেন। মানিকগঞ্জ-১ আসনে এমপি ছিলেন বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। তিনি মারা যাওয়ায় ওই আসনে তার ছেলে খন্দকার আখতার হামিদ ডাবলু ও ড. খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঢাকা-১৪ আসনে এমপি নির্বাচিত হন এসএ খালেক। বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি নির্বাচন না করলে তার ছেলে সৈয়দ সিদ্দিক সাজু নির্বাচন করবেন।
চাঁদপুর-১ আসনের এমপি ছিলেন এহসানুল হক মিলন। বেশ কিছু মামলার আসামি তিনি। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে আছেন। আগামীতে তিনি নির্বাচন না করলে তার স্ত্রী বেবী নির্বাচন করতে পারেন। চট্টগ্রাম-২ আসনের এমপি ছিলেন প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তার মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় ওই আসনে তার স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী অথবা ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী রয়েছেন মনোনয়ন তালিকায়।
নাটোর-১ আসনে এমপি ছিলেন ফজলুর রহমান পটল। তিনি মারা যাওয়ায় ওই আসনে তার স্ত্রী কামরুন্নাহার শিরিন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সিলেট-২ আসনে এমপি ছিলেন এম ইলিয়াস আলী। তার নিখোঁজ হওয়ার পর ওই আসনে আগামীতে তার স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনা নির্বাচন করতে চান। ঢাকা-৭ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর আসনে তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা মনোনয়ন পেতে পারেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হান্নান শাহ মারা যাওয়ায় গাজীপুর-৪ আসনে তার ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফরিদপুর-২ আসনে বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তুখোড় নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান। তিনি মারা যাওয়ায় ওই আসনে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তার মেয়ে শামা ওবায়েদ রিংকু।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর আসন পাবনা-১। এ আসনে তার ছেলে ব্যারিস্টার নাদিম মোমেনকে জামায়াতের মনোনয়ন দেয়া হতে পারে।
২০ দলীয় জোটের অন্য দলগুলোর নেতাদের মধ্যে দিনাজপুর-১ আসনে জাগপা নেতা প্রয়াত শফিউল আলম প্রধানের স্ত্রী রেহানা প্রধান অথবা তার মেয়ে ব্যারিস্টার তাসনিয়া প্রধানকে ছেড়ে দিচ্ছে বিএনপি। কুমিল্লা-১১ আসনে প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদের মেয়ে জয়া কাজী আহম্মেদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পিরোজপুর-১ আসনে জামায়াতের সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বর্তমানে কারাগারে। ওই আসনে তার ছেলে মাসুদ সাঈদীকে ছাড় দিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, আন্দোলনে যারা ভূমিকা রেখেছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন তাদের মধ্যে যোগ্য, ত্যাগী ও জনপ্রিয়দের মনোনয়ন দেয়া হবে। এক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া চট্টগ্রামের একটি আসন থেকে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা নির্বাচন করতে চান।