এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। বৈধভাবে গেলেও থাকা-খাওয়া, চিকিৎসার খরচ জোগাড় কঠিন হবে। যারা আছেন, তাদের গ্রিনকার্ড পাওয়ার আবেদনও প্রত্যাখ্যান হতে পারে।
এমনকি ইতিমধ্যেই গ্রিনকার্ড ও সরকারি সুবিধার যোগ্যতা অর্জন করেছেন তাদের কপালেও শনি নেমে আসছে। দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে দৈনন্দিন জীবন। নতুনরা ছাড়াও দেশটিতে বসবাসরত প্রায় দুই কোটি অভিবাসী এ ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রায় ৩ লাখ ৮২ হাজারের বেশি ব্যক্তি স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়ে থাকেন। নতুন নীতি তাদের ওপরও প্রভাব ফেলবে। শনিবার দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এ সম্পর্কে একটি নতুন আইন প্রস্তাব করেছেন।
২ মাস পর প্রস্তাবটি কংগ্রেসে পাস হলেই তা আইনে পরিণত হবে। খবর বিবিসি, এনবিসির।
প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসী যারা এ পর্যন্ত ওবামাকেয়ার, শিশু স্বাস্থ্যবীমা, ফুড স্ট্যাম্পস ও অন্যান্য সুবিধা ব্যবহার করেছেন তারা গ্রিনকার্ড মর্যাদা লাভে বাধাগ্রস্ত হতে পারেন। মার্কিন মুল্লুকের বোঝা হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
এ আইন শুধু নতুন করে যারা স্থায়ী বসবাসের অনুমতি চাইবেন তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে বললেও পুরাতনদের ওপরও এর প্রভাব পড়বে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খসড়া চূড়ান্ত হলে দেশটিতে বৈধভাবেও যেসব অভিবাসী যাবেন বা রয়েছেন তাদের জন্যও পূর্বের সরকারি সুবিধা অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়াবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্স্টজেন নিয়েলসেন (সেক্রেটারি অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি) বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যারা অভিবাসনের আবেদন করবেন তাদের আর্থিকভাবে নিজেদের সাহায্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে’।
তিনি জানিয়েছেন, অভিবাসীদের আত্মনির্ভরশীলতায় উদ্বুদ্ধ করা হবে যাতে করে তারা আমেরিকান করদাতাদের জন্য বোঝা না হন। সেজন্য প্রস্তাবিত আইন কংগ্রেসে উত্থাপন করা হবে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বিভাগের প্রস্তাবিত রেগুলেশন্সে অভিবাসন কর্মকর্তাদের ভিসা কিংবা বসবাসের অনুমতি প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
প্রায় দু’দশক ধরে চলমান নীতির আওতায় সেখানকার বৈধ অভিবাসীরা খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থানের পাশাপাশি নানা ধরনের সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। এখন থেকে আর সেটি হবে না।
অভিবাসন আইনজীবী, অ্যাডভোকেট ও সরকারি স্বাস্থ্য গবেষকরা বলছেন, কয়েক দশকের মধ্যে বৈধ অভিবাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনে এটা হবে বৃহত্তর চ্যালেঞ্জ। তারা বলেন, এ পদক্ষেপ বিশেষভাবে কর্মরত অভিবাসীদের কঠিন ধাক্কা দেবে যারা পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য পর্যাপ্ত আয় করেন না।
অভিবাসন আইনজীবীরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে এমনিতেই গ্রিনকার্ড অনুমোদন কমছিল। নতুন এ আইনে গ্রিনকার্ড প্রত্যাখানের সংখ্যা আরও বাড়বে।
তবে হোমল্যান্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন এ নীতিমালা কংগ্রেসে উত্থাপনের প্রয়োজনই হবে না। কারণ প্রস্তাবটির ভালো-মন্দ যাচাই-বাছাই বিবেচনার ৬০ দিন সময় নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর মধ্যে প্রস্তাবের ওপর নাগরিক মতামত নেয়া হবে এবং মতামতগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।