এশিয়ান বাংলা স্পোর্টস : মেঘের অনেক রং। এক ম্যাচেও খেলা করে অনেক রং। ক্রিকেট খেলাটাই এমন। এই রোদ এই ছায়া। এই বৃষ্টি। গত পরশু আবুধাবিতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচও ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টাল। যার শেষ একেবারে অন্তিম ওভারে। ছয় বলে আট রানের সমীকরণে। সেখানে মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে হেরে গেলেন শেনওয়ারি। শেষ বলে চার রান নেবেন কী, তার হাত থেকে ব্যাটই পড়ে গেল। শ্বাসরুদ্ধকর সমাপ্তি একেই বলে। তিন রানের নাটকীয় জয়ে ফাইনালের আশা জিইয়ে রাখল বাংলাদেশ। বিদায় নিল আফগানিস্তান।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা বলেন, ‘মোস্তাফিজ পাঁচ ওভার পর থেকেই বলছিল, ‘ভাই, আমি আর পারব না।’ শুনে তো আমার মাথায় হাত! রুবেল খেলেনি। ম্যাচটা জিততেই হবে। ওর দশ ওভার ছাড়া তো ম্যাচ জেতা কঠিন। আমি ওকে বোঝালাম, তোকে পারতেই হবে। চেষ্টা করেছি ছোট স্পেলে ওকে বোলিং করাতে।’ বোলিংয়ে মাশরাফির নিজেরও সমস্যা হচ্ছিল। নিজের অবস্থা অন্যদের জানাতে চাননি তিনি। পাছে তারা আবার ভেঙে না পড়ে, এই শঙ্কায়। এ নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমারও বল করতে কষ্ট হচ্ছিল। ভাবছিলাম আমি যদি নিজের কথা বলি, অন্যরা আরও দমে যাবে। চেষ্টা করেছি ওদের যতটা সম্ভব সাপোর্ট দেয়ার।’ তিনি বলেন, ‘শিশির পড়ছিল, ঘাম ঝরছিল। বল গ্রিপ করাই অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। বারবার মাটিতে হাত ঘষেছি। সাকিবের কাজটা কঠিন হয়ে পড়ছিল। মোস্তাফিজের অনেক কাটার গ্রিপ করেনি। শেষ পর্যন্ত ভালোয় ভালোয় শেষ করতে পেরেছি, এটাই স্বস্তির।’
এদিকে ২০০১ সালে ওডিআইতে অভিষেক হওয়া মাশরাফির এই ফরম্যাটে ২৫০ উইকেট নিতে লেগে গেল ১৭ বছর! বিরাট কোহলির অভিষেক হয়েছে মাশরাফির দশ বছর পর। অথচ তিনি মাশরাফির চেয়ে ২০টি ওডিআই বেশি খেলেছেন। ক্যারিয়ারে সাতটি অস্ত্রোপচারও দমাতে পারেনি মাশরাফিকে। ২০১৫ থেকে তিনি ইনজুরি ছাড়া নিয়মিত খেলতে পারছেন। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে আড়াইশতম উইকেট পেতে মাশরাফির দরকার ছিল আর মাত্র দুটি উইকেট। হাশমতউল্লাহ ও আসগর আফগানের উইকেট নিয়ে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। এর মধ্যে ৪৯টি উইকেট দেশের হয়ে, একটি এশিয়া একাদশের হয়ে। ওডিআইতে সর্বোচ্চ উইকেট পাওয়া বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মাশরাফির পরে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। তার শিকার ২৪৪ উইকেট। বিশ্বের ১৭তম পেস বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে আড়াইশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মাশরাফি। সব মিলিয়ে তার আগে ২৪ বোলার ওয়ানডেতে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন।
ওডিআইতে বাংলাদেশের সেরা পাঁচ বোলার
বোলার ম্যাচ ওভার উইকেট সেরা ইকোনমি রেট
মাশরাফি মুর্তজা ১৯২ ১৫৯৩.৫ ২৫০ ৬/২৬ ৪.৭৯
সাকিব আল হাসান ১৯২ ১৬২০.৫ ২৪৪ ৫/৪৭ ৪.৪৬
আবদুর রাজ্জাক ১৫৩ ১৩২৭.৩ ২০৭ ৫/২৯ ৪.৫৬
মোহাম্মদ রফিক ১২৩ ১০৪৯.০ ১১৯ ৫/৪৭ ৪.৩৯
রুবেল হোসেন ৯১ ৬৬৮.৪ ১১৫ ৬/২৬ ৫.৬৪