এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলো। পাশাপাশি অলিগলি চায়ের দোকান সর্বত্রই এখন আলোচনার বিষয় আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। শুধু কেন্দ্রীয় নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থী নয়, ভোটারদের মধ্যেও নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। কে প্রার্থী হচ্ছেন, কোন দল কাকে মনোনয়ন দিচ্ছেন, কার জয়ের সম্ভাবনা বেশি- যে যার মতো করে এ ধরনের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মাঠঘাট চষে বেড়াচ্ছে। ট্রেন, সড়কপথে কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত। বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও বসে নেই। বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে নির্বাচনী জনসভা করে প্রার্থী পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। আনুষ্ঠানিক প্রচারে না থাকলেও নির্বাচনী কার্যক্রমে পিছিয়ে নেই মাঠের বিরোধী দল বিএনপিও। নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই তাদের সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে। বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়াও এরই অংশ। নিজ দলের পাশাপাশি দুই জোটের শরিকদের মধ্যেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। আসন ভাগাভাগিসহ নিজেদের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত তারা। জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে কাজ করছে ৮ দলীয় বাম জোট। কিভাবে হবে, আগে সে সমস্যার সমাধান চায় দলগুলো।
খোদ রাজধানীতে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে রঙিন পোস্টার লাগানো হচ্ছে। শীর্ষ নেতারা গণসংযোগ করছেন। বিতরণ করছেন লিফলেট। কেন্দ্রের পাশাপাশি তৃণমূলেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। নির্বাচনী মাঠে সরব সব দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। নানাভাবে প্রচার চালাচ্ছেন তারা। প্রতিটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারের মাধ্যমে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। প্রতিটি দেয়ালে এমনকি যানবাহনেও দেখা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার। সম্ভাব্য প্রার্থীরা যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ধর্মীয়, সামাজিকসহ নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন তারা। চলছে উঠোন বৈঠক, ঘরোয়া সভাসহ নানা তৎপরতা।
সবকিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথমদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ১ থেকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণার চিন্তাভাবনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আগামী নির্বাচনের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যেও এখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে। সাধারণ মানুষও এখন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী একটি দল। জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের মতো সার্বিক প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমরা নির্বাচন চাই। যাতে সব দল অংশগ্রহণ করতে পারে এবং ভোটাররা নির্ভয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। এজন্য আমরা সাত দফা দাবি দিয়েছি। সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার এসব দাবি পূরণে দ্রুত উদ্যোগ নেবে বলে আমরা আশা করি।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট : নির্বাচনী প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল, সর্বত্রই দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে নির্বাচনী আমেজ। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, প্রার্থী বাছাই, নির্বাচনী গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ। একই সঙ্গে কর্মী সভা। আর সার্বিক করণীয় ঠিক করতে প্রতিদিনই বৈঠকে বসছেন কেন্দ্রের শীর্ষ নেতারা। বসে নেই জোটবন্ধু ১৪ দল। নির্বাচনী মাঠ দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে জোটটি।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এরই মধ্যে শতাধিক আসনে দলীয় প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছে। অপেক্ষমাণ আছে আরও একশ জন। বাকিদের ব্যাপারে নির্বাচনী তফসিলের পর ঘোষণা। নির্বাচনী ইশতেহার নিয়েও কাজ শেষ পর্যায়ে। এবারের ইশতেহারে বেশ কিছু চমক থাকছে। লোগো, ব্যাগ ও স্লোগান নির্মাণের কাজ প্রায় চূড়ান্ত। নির্বাচনী প্রস্তুতিতে অংশ হিসেবে এবার সারা দেশে আসছে অভিন্ন পোস্টার। এসব পোস্টারে সরকারের উন্নয়ন চিত্র স্থান পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
নির্বাচনী প্রস্তুতি সারতে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে নির্বাচনী কোর-কমিটি, জেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ১৫টি উপকমিটি গঠন নিয়ে কথা হয়েছে। আগামী সাপ্তাহের প্রথমদিকে এসব কমিটি পুরোদমে কাজে নেমে পড়ার কথা। এছাড়া যাদের পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে সে ধরনের তালিকা তৈরির কাজ শেষ। এখন প্রশিক্ষণের পালা। আগামী সপ্তাহ থেকে এই প্রশিক্ষণ কাজ শুরু করবে দলটি। এছাড়া ভোট কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের চিঠি পাওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা। ১ অক্টোবর থেকে কেন্দ্র ঘোষিত গণসংযোগে নেমেছে নেতাকর্মীরা। ঢাকার মতো তৃণমূল নেতাকর্মীরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট ও প্রচারপত্র বিলি করছেন। করছেন উঠোন বৈঠক। সমানতালে চলছে কর্মী সভা। এ গণসংযোগ একটানা ৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক কোরায়শী যুগান্তরকে বলেন, আমরা কেন্দ্রের নির্দেশে গণসংযোগ করছি। প্রচার বেশ জোরেশোরেই চলছে। কেন্দ্রীয় নেতারা সব সময় নির্দেশনা দিচ্ছেন। নির্বাচনী গণসংযোগ এখন উৎসবের আমাজে পরিণত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নির্বাচনী সফর শুরু করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ৩০ আগস্ট সিলেট যাত্রার মধ্য দিয়ে তিনি নির্বাচনী সফর শুরু করেন। এরপর নির্বাচনী টেনযাত্রায় ৮ সেপ্টেম্বর উত্তরাঞ্চলের ৮টি জেলা সফর করেন তিনি। ২২ সেপ্টেম্বর সড়কপথে কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার সফর করেন। এ মাসেই বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা সফরের পরিকল্পনা আছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের।
এদিকে নির্বাচনী মাঠ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। জোট-মহাজোট গঠনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রাথমিক দায়িত্ব পালন করছেন। ছোট দলগুলোর সমন্বয়ের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। এ নিয়ে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা জোটগতভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছি। রাজপথেও নেমেছি। গণসংযোগের পাশাপাশি সমাবেশ করছি। অক্টোবরজুড়ে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আমাদের নির্বাচনী জনসভা আছে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট : দলটির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ঘোষণা না দিলেও সার্বিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে দলটি। সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা, নির্বাচনী ইশতেহার তৈরিসহ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করেছে বিএনপি। সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দলটির নেতারা মনে করেন, যে কোনোভাবে একটি অবাধ নির্বাচন হলে তারা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। দলীয় ভোটের পাশাপাশি সরকারবিরোধী বড় একটি অংশের ভোটও তাদের বাক্সে পড়বে।
নির্বাচনকে টার্গেট করে সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। দল পুনর্গঠনের পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরির প্রস্তুতি চলছে। প্রতিটি সংসদীয় আসনে কমপক্ষে তিনজন করে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা হচ্ছে। এছাড়া গোপনে জরিপ চালিয়েও একটি তালিকা তৈরি করছে হাইকমান্ড। দুই তালিকা থেকে সমন্বয় করে মনোয়ন চূড়ান্ত হবে।
সূত্রমতে, সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে ইশতেহার তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এ লক্ষ্যে দলীয় নেতাদের পাশাপাশি পেশাজীবীদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। ‘ভিশন ২০৩০’ এর আলোকেই তৈরি করা হচ্ছে নির্বাচনী ইশতেহার।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান যুগান্তরকে বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমরা সাত দফা দাবি তুলে ধরেছি। সরকার আমাদের দাবি মেনে নেবে না, তা বলার সময় এখনও আসেনি। আমরা আশা করছি, সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করবে।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী দল হিসেবে আন্দোলনের পাশাপাশি আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতিও রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যেভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে তা বেআইনি। তফসিল ঘোষণার আগে আইন অনুযায়ী তারা এভাবে প্রচার চালাতে পারে না। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ। কারণ ইসি নিরপেক্ষ নয়।
জানা গেছে, আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ এলাকায় দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জনসমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে স্থানীয়ভাবে কর্মসূচি পালনেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রাক-প্রস্ততি শুরু করেছেন।
কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ইশতিয়াক আহমেদ নাসির বলেন, আমরা আন্দোলন ও নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছি। প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে কর্মিসভা করছি। আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সেই প্রস্তুতিতেই আমরা ব্যস্ত। কারণ খালেদা জিয়াকে ছাড়া নেতাকর্মীদের কাছে নির্বাচন কখনও উৎসবমুখর হবে না। তিনি বলেন, তৃণমূলে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে যোগ্য প্রার্থীকে তারা ভোট দিতে মুখিয়ে আছে।
জানা গেছে, বিএনপি ছাড়াও ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। প্রকাশ্যে প্রচার না চালালেও সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করছে দলগুলো। প্রধান শরিক বিএনপির সঙ্গে এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে দরকষাকষিও শুরু করেছে। এলডিপির পক্ষ থেকে লিখিতভাবে ৩০টি আসন চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বরাবর প্রার্থী তালিকাও হস্তান্তর করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টি : বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পুরোদমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে। দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বইছে নির্বাচনী হাওয়া। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচনী সফরে বিভিন্ন জায়গায় জনসভা করছেন। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা যাচ্ছেন তৃণমূল সফরে। কেন্দ্র থেকে এককভাবে প্রস্তুতির পাশাপাশি বৃহত্তর জোটের অধীনেও নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে। এককভাবে ৩০০ আসনে সম্ভব্য প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মহাজোটের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে এরশাদ বৈঠকও করেছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ৩শ’ আসনের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। প্রতি আসনে আমাদের একাধিক প্রার্থী আছে। আমরা প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক কাজ শেষ করেছি। দলের আগামী পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর আমাদের দলের প্রেসিডিয়ামের সভা আছে। সভায় ২০ সেপ্টেম্বরের সমাবেশ, নির্বাচনী প্রস্তুতিসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হবে।
বাম জোট : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিতে কাজ করছে ৮ দলীয় বাম জোট। মহাজোট ও ২০ দলীয় জোটের বাইরে গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনী মোর্চা গড়ে তুলে ভোটের লড়াইয়ে নামবেন তারা। প্রাথমিকভাবে সিপিবি, বাসদ (খালেকুজ্জামান) এবং গণতান্ত্রিক বাম মোর্চায় থাকা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন ও বাসদ (মাক্সবাদী)- এ আটটি দল মিলে নতুন জোট। পাশাপাশি এর বাইরে যেসব বাম দল রয়েছে, সেগুলোকেও জোটে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এর আগে নির্বাচন কীভাবে হবে, সেই সমস্যার সমাধান চায় দলগুলো।
এই বাম জোট মোর্চা আকারে ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এখন তারা নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির আন্দোলন করছে। নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি না হলে প্রহসনের নির্বাচনে তারা না-ও যেতে পারে।
এ বিষয়ে জোটের শরিক গণসংহতি প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, এ মুহূর্তে নির্বাচনী পরিবেশ নেই। আমাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটা অনিশ্চিত। তিনি বলেন, সবক্ষেত্রে দখলদারিত্বের আয়োজন পাকাপোক্ত করেই সরকার নির্বাচনে যেতে চায়। আমরা চাই, আগে সরকার নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুক। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে প্রহসনের নির্বাচনে আমরা যাব না। তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি জোটগতভাবে নেয়া আছে। তবে আমরা যাতে নির্বাচন করতে না পারি, সরকার সেই পাঁয়তারা করছে।