এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৬ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে।
শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এ তথ্য জানান।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, সমাবেশের জন্য পুলিশের অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করি অনুমতি পাব। সমাবেশ সফল করতে শনিবার (আজ) নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারি জোটের একগুঁয়েমি মনোভাব গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের অশনিসংকেত। সংলাপে মানুষের মনে যে আশাবাদ জেগে উঠেছিল, সংলাপ শেষে সেই আশার মুকুল ঝরে যেতে শুরু করেছে। সংলাপে ৭ দফায় আওয়ামী লীগ সাড়া না দেয়ায় এবং দলটির অনড় অবস্থানের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আবদুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, সংলাপের জিগির তুলে একদিকে জনগণকে দেখানো হচ্ছে তারা কত আন্তরিক, অন্যদিকে সমানতালে নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতা অব্যাহত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিশ্চয়ই সংবাদপত্রে দেখেছেন, গায়েবি মামলায় ঝিনাইদহে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত পল্লীচিকিৎসক ও বৃদ্ধ আবদুল বারীর পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে তোলার অমানবিকতার দৃশ্য।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংলাপের ভাষণে রাজনৈতিক মামলায় কারা আছেন, তাদের তালিকা চেয়েছেন; তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। তার ১০ বছরের শাসনামলে বিরোধী দলের কাদের নামে মামলা দিয়ে বারবার কারাগারে ঢোকানো হচ্ছে, সেটি কি প্রধানমন্ত্রীর অজানা? সংলাপ শেষ হওয়ার পরই আমরা দেখলাম- টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালেহ মোহাম্মদ ইথেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে পুলিশি শক্তির ব্যবহার ছাড়া আওয়ামী জোট সরকারের আর কোনো ভিত্তি নেই।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করা মানে তার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতি বাস্তবায়ন করা। সরকার অনমনীয় মনোভাব দেখাতে থাকলে মাথা উঁচু করে সাত দফা দাবি রাজপথেই আদায় করতে হবে। দুর্জয় সাহস নিয়ে মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে। তিনি বলেন, অন্যায়-অবিচারে বন্দি খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হবে আত্মঘাতী। দেশকে গণতন্ত্রমুখী করতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আর নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন করা হবে মৃত্যুকূপে ঝাঁপ দেয়া। যে সরকার জনমতকে পাত্তা দেয় না, সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা বোকার স্বর্গে বাস করা।
রিজভী অভিযোগ করেন, জাতীয় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাশূন্য করে একতরফা নির্বাচনের নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র হাতে থাকলে সবকিছুই করা যায়। ক্ষমতাসীনদের মামলাগুলো ঝরে যায় আর বিরোধীদেরগুলো পুষে রাখা যায়। হানাদারি দুঃশাসনে যাদের হাতে বন্দুক থাকে, তাদের সবাই ভয় পায়। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইন-আদালত সবাই নতজানু রাষ্ট্রীয় বন্দুকধারীদের কাছে। সরকারের নির্দেশ ছাড়া কারোরই টুঁ শব্দ করার জো নেই। বাংলাদেশে আইনের শাসন সীমাহীন দূরে অবস্থান করছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ক্রোধের শিকার খালেদা জিয়া এবং তার সন্তান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই গণবিচ্ছিন্ন পরনির্ভরশীল আওয়ামী লীগ সরকার জিয়া পরিবারকে ধ্বংসের যে মানচিত্র তৈরি করেছে, সেই নকশানুযায়ীই কাজ চলছে।