এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : পাকিস্তানের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা ও সাবেক সিনেট সদস্য মাওলানা সামিউল হক তার নিজ বাসভবনে আততায়ীর হামলায় নিহত হয়েছেন।
তার ছেলে মাওলানা হামিদুল হকের বরাতে দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
হামিদুল হক বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় তার অশীতিপর বাবা যখন নিজ কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখন আততায়ী তাকে ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
তিনি বলেন, বাবার গাড়ি চালক হাক্কানি বাইরে বেরিয়েছিলেন। ফেরি এসে দেখেন মাওলানা সামির নিধর দেহ বিছানায় পড়ে আছে। তার চারপাশ রক্তের ডোবায় পরিণত হয়ে গিয়েছিল।
এমন এখন সময় মাওলানা সামিউলের হত্যার খবর আসলো, যখন পাকিস্তান একটি স্পর্শকাতর সময় পার করছে।
ধর্ম অবমাননায় মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবিকে সুপ্রিম কোর্টের খালাস দেয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে।
জমিয়াত উলেমা-ই-ইসলামের একাংশের নেতা ছিলেন মাওলানা সামি। আসিয়া বিবিকে খালাসের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে অংশ নিতে পারেননি তিনি।
মাওলানা হামিদ বলেন, তাকে বেশ কয়েকবার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। নিহত মাওলানা সামির মুখপাত্র ইউসুফ শাহ বলেন, হত্যাকারীকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তার উদ্দেশ্যও জানা যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে।
৮২ বছর বয়সী মাওলানা সামি খাইবার পাখতুনখাওয়ায় দারুল উলুম হাক্কানিয়া মাদ্রাসার প্রধান ছিলেন। ১৯৮৪-১৯৯১ ও ১৯৯১-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির সিনেট সদস্য ছিলেন।
ক্ষমতাসীন তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির সঙ্গেও তার সুসম্পর্ক ছিল। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে নিয়ে বেশ কিছু সংস্কার কাজ এগিয়ে নিতে চেয়েছিলেন।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত তিন মাস তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
১৭ বছর ধরে চলা আফগান যুদ্ধের অবসানে গত মাসে ‘তালেবানের জনক’ নামে পরিচিত মাওলানা সামিউল হকের সহায়তা চেয়েছিলেন আফগানিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।
তখন তিনি বলেছিলেন, এই জটিল সংকটের সমাধান তার জন্য এখন খুব সহজ না। কিন্তু তিনি এই রক্তপাতের অবসান দেখতে চান।