এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : বাংলাদেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম। শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এক ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। ‘জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম হবে না, এমন নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ নেই’- মন্তব্য করে গত আগস্ট মাসে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। সিইসির এই বক্তব্যের সঙ্গে বেগম কবিতা খানমসহ চার নির্বাচন কমিশনারই দ্বিমত করেছিলেন।
তখন তারা বলেছিলেন, এটা ইসির অবস্থানও নয়। সিইসির এমন বক্তব্য নির্বাচনে অনিয়মকারীদের উস্কে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তখন সিইসিকে সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শও দেয়া হয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। গতকাল সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের ব্রিফিংয়ে কবিতা খানম বলেন, আমরা জনগণকে এমন কোনো নির্বাচন উপহার দিতে চাই না, যেন জনগণের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু হান্ড্রেড পারসেন্ট সুষ্ঠু নির্বাচন- এটা পৃথিবীর কোনো দেশেই হয় না।
আমাদের দেশেও তা সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে চাই, একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, যেটা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে। সহাকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। এই হাওয়া যেন কোনোভাবেই বৈরী না হয়, এই নির্দেশনা কমিশন থেকে থাকবে। আপনাদের সেটা প্রতিপালন করতে হবে। কমিশন চায় না নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক।
কবিতা খানম বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে তুলে আনা অনেক কঠিন কাজ। সবার সঙ্গে সদাচরণ করে, সৎ ব্যবহার করে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার দায়িত্ব শুধু নির্বাচন কমিশনের নয়, এটা সবার দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন কবিতা খানম। এ সময় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সবার জীবনে এই সুযোগ না-ও আসতে পারে। ইসি সচিব বলেন, ৩০শে ডিসেম্বর নির্বাচন হবে, এটা ফিক্সড। নির্বাচন হবে সব দলের অংশগ্রহণে। তাই নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। দেশের অনেক জায়গায় এখনও ব্যানার-পোস্টার নামানো হয়নি উল্লেখ করে হেলালুদ্দীন আহমদ রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ১৮ই নভেম্বরের মধ্যে এগুলো নামিয়ে ফেলতে হবে এবং মনোনয়নপ্রাপ্তরা যেন ব্যানার-পোস্টার লাগানোর সুযোগ না পান, সেদিকে নজর রাখবেন।