এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সমুদ্রের নিচে টেকটনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষের ফলে প্লেটগুলো এলোমোলো হয়ে যাচ্ছে। এতে অধিক পরিমাণে মহাসাগরের পানি টেনে নিচ্ছে পৃথিবী। যেটি আগের ধারণার চেয়ে তিনগুণ বেশি। ফলে শুকিয়ে যাচ্ছে সাগর। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতম খাদ মারিয়ানা ট্রেঞ্চের কিছু অংশে ভূকম্পন-সংক্রান্ত গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেইন্ট লুইসের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বিজ্ঞান অনুষদের বিজ্ঞানীরা এ গবেষণা চালিয়েছেন। গত ১৫ নভেম্বর বিজ্ঞানবিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল নেচার-এ গবেষণা প্রতিবদেনটি প্রকাশ পেয়েছে। পানি টেনে নেয়ার এ পদ্ধতিকে গবেষণায় পৃথিবীর ‘সমুদ্র গ্রাস বা সমুদ্র খাওয়া’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ নিবন্ধে দেখানো হয়েছে, পৃথিবীর অভ্যন্তরে অবস্থিত টেকটনিক প্লেটগুলোর একে-অপরের সঙ্গে মৃদু ধাক্কার কারণে ভূগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। টান পড়ছে মহাসাগরের পানিতে। বিপুল পরিমাণ জল প্রবেশ করছে ভূগর্ভের গভীরে। কমছে জলস্তর। ক্রমেই উধাও হয়ে যাচ্ছে সমুদ্র। ভূমিকম্পের সূত্র ধরেই এ তথ্যে উপনীত হয়েছেন গবেষকরা। সিসমোগ্রাফে ধারণকৃত রেখাগুলোর বিশ্লেষণ করতে করতে তারা দেখিয়েছেন, প্রশান্ত মহাগারের ম্যারিনাস ট্রেঞ্চ অঞ্চলে প্যাসিফিক প্লেট ফিলিপাইন প্লেটের নিচে ঢুকে যাচ্ছে। সেখানে মহাসাগরের পানি প্রবেশ করছে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানের গবেষক ওয়েইসেন শেন, ডগলাস এ উইয়েনস প্রমুখ এ ঘটনাকে রীতিমতো বিপদ বলেই চিহ্নিত করেছেন। এ থেকে ভূমিকম্পের প্রবণতা বাড়ছে বলেই তাদের ধারণা। তবে কী পরিমাণ সমুদ্রজল ভূগর্ভের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে, সে হিসাব পাওয়া অসম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। নিবন্ধটির এক লেখক বিজ্ঞানী ছেন কাই বলেন, ‘সবাই জানে যে, ভূগর্ভের সাবডাক্টিং প্লেট দিয়ে পানি নিচের দিকে চলে যায়। কিন্তু কত পরিমাণে যায় এটা সবার অজানা।’ উইয়েনস বলেন, সাবডাক্টিং প্লেট দিয়ে পানি সর্বোচ্চ ৬০ মাইল নিচে চলে যায়। কিন্তু আমাদের গবেষণায় তার চেয়েও তিনগুণ গভীরতার প্রমাণ মিলেছে।’ এ গবেষণাপত্রের বিপরীতে অনেক বিশেষজ্ঞ প্রশ্নও তুলেছেন, যে পরিমাণ জল ভূগর্ভে প্রবেশ করে, সেই পরিমাণ জল কি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে বেরিয়ে আসে না? গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ছেন কাই জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা পুনরায় অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।