এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী মাঠ একচ্ছত্রভাবে দখল করে রেখেছেন। এ ছাড়া আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার- প্রচারণাও চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। গতকাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষা দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে ক্ষমতাসীনদের ব্যাপক নিপীড়ন ও কারচুপি হয়েছে। ২০১৪ সালে বিতর্কিত ও প্রায় ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী জোট দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার কারণে নাগরিকরা তাদের ভোটাধিকারসহ নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত হন। তাই ৩০শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। জনগণের আকাক্সক্ষা আছে এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিএনপি এবং জোটভুক্ত দলের নেতাকর্মীদের দমনের ঘটনা ঘটেই চলছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত। অথচ একটি অসমতল নির্বাচনী মাঠ বহাল রাখার মধ্য দিয়ে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন তার পূর্বসূরি রকিব কমিশনের মতোই আজ্ঞাবহ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছে। এই কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের জালভোট দেয়া, কেন্দ্র দখল ও বিরোধী দল মনোনীত প্রার্থীর এজেন্টদের আটক ও বের করে দেয়া এবং ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করলেও সংলাপের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। উপরন্তু নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করতে পারেন এমন ব্যক্তিদের তালিকা গোপনে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। সেই তালিকা নিয়ে দুই মাস আগে তথ্য সংগ্রহে মাঠে নামে পুলিশ।
অধিকারের প্রতিবেদনে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের আজ্ঞাবহ ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশন থেকে বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করারও আহ্বান জানানো হয়।