এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নতুনদের প্রাধান্য দিয়েছে বিএনপি। দলটির ৯৫ জন প্রার্থী প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছেন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে। সবচেয়ে বেশি নতুন মুখ ঢাকা বিভাগে। বিএনপির পাশাপাশি ২০ দলীয় জোটের শরিক দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের মধ্যেও অনেকেই এবার প্রথম জাতীয় নির্বাচনে লড়বেন। অনেক জেলায় একজনও পুরনো প্রার্থী পাননি ধানের শীষের টিকিট। প্রার্থী চূড়ান্তকরণে নতুনদের প্রাধান্য দিলেও গুরুত্ব পেয়েছে তাদের স্থানীয় নির্বাচনের অভিজ্ঞতা। নতুন প্রার্থীদের অনেকেই অতীতে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। কেউ কেউ সেসব পদ থেকে পদত্যাগ করেই অংশ নিচ্ছেন জাতীয় নির্বাচনে।
এক্ষেত্রে বিবেচনা করা হয়েছে স্থানীয় নির্বাচনে তাদের প্রমাণিত জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক শক্তির বিষয়গুলো। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। সদ্য পঁচিশ পেরুনো ডা. সানসিলা জেবরিন মনোনয়ন পেয়েছেন শেরপুর-১ আসনে। তরুণ ভোটারদের কাছে টানার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে প্রার্থী চূড়ান্তকরণে। নতুনদের পাশাপাশি অন্তত ১০০জন রয়েছেন যারা অতীতে এক বা একাধিক জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। অনেকেই মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। দলটির দায়িত্বশীল নেতারা জানান, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও যেন প্রার্থীরা ভোটের মাঠে টিকে থাকতে পারে সেজন্য সমন্বয় করা হয়েছে নবীন-প্রবীণ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে অভিজ্ঞদের। এবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন ১৬ জন নারী ও ৭ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রার্থী।
বিএনপির দলীয় নতুন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- রংপুর বিভাগ: পঞ্চগড়-১ আসনে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, পঞ্চগড়-২ আসনে ফরহাদ হোসেন আজাদ, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জাহিদুর রহমান, দিনাজপুর-২ আসনে সাদিক রিয়াজ, দিনাজপুর-৩ আসনে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, লালমনিরহাট-১ আসনে হাসান রাজিব প্রধান, লালমনিরহাট-২ আসনে রোকনউদ্দিন বাবুল, রংপুর-৬ আসনে সাইফুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে আজিজুর রহমান, গাইবান্ধা-৪ আসনে ফারুক কবির আহমেদ, গাইবান্ধা-৫ আসনে ফারুক আলম সরকার;
রাজশাহী বিভাগ: জয়পুরহাট-১ আসনে ফজলুর রহমান, বগুড়া-৩ আসনে মাসুদা মোমিন, বগুড়া-৪ আসনে মোশাররফ হোসেন, বগুড়া-৭ আসনে মোরশেদ মিল্টন, নওগাঁ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান, নওগাঁ-৩ আসনে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী, নওগাঁ-৫ আসনে জাহিদুল ইসলাম ধলু, রাজশাহী-৩ আসনে শফিকুল হক মিলন, রাজশাহী-৫ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, নাটোর-৩ আসনে দাউদার মাহমুদ, নাটোর-৪ আসনে আবদুল আজিজ, সিরাজগঞ্জ-১ রুমানা মোরশেদ কনকচাঁপা, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আমিরুল ইসলাম খান আলিম, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে ডা. এমএ মুহিত;
খুলনা বিভাগ: মেহেরপুর-২ আসনে জাভেদ মাসুদ মিল্টন, কুষ্টিয়া-৩ আসনে জাকির হোসেন সরকার, চুয়াডাঙ্গা-১ শরিফুজ্জামান শরিফ, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মাহমুদ হাসান খান, ঝিনাইদহ-১ আসনে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, ঝিনাইদহ-২ আসনে আবদুল মজিদ, ঝিনাইদহ-৪ আসনে সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ঝিনাইদহ-৫ আসনে মতিউর রহমান, যশোর-৩ আসনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মাগুরা-১ আসনে মনোয়ার হোসেন খান, বাগেরহাট-১ আসনে মাসুদ রানা, খুলনা-৩ আসনে রকিবুল ইসলাম বকুল;
বরিশাল বিভাগ: ভোলা-১ আসনে গোলাম নবী আলমগীর, ঝালকাঠি-২ আসনে জেবা আমিন খান, পটুয়াখালী-২ আসনে সালমা আলম, পিরোজপুর-৩ আসনে রুহুল আমিন দুলাল; ময়মনসিংহ বিভাগ: শেরপুর-১ আসনে ডা. সানসিলা জেবরিন, শেরপুর-২ আসনে ফাহিম চৌধুরী, ময়মনসিংহ-১ আসনে আলী আজগর, ময়মনসিংহ-৪ আসনে আবু ওয়াহাব আখন্দু, নেত্রকোনা-২ আসনে ডা. আনোয়ারুল হক, নেত্রকোনা-৪ আসনে তাহমিনা জামান শ্রাবণী ও নেত্রকোনা-৫ আসনে আবু তাহের তালুকদার; ঢাকা বিভাগ: কিশোরগঞ্জ-১ আসনে রেজাউল করিম খান চুন্নু, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল, টাঙ্গাইল-১ আসনে সরকার শহীদ, মানিকগঞ্জ-১ আসনে এসএ জিন্নাহ কবীর, ঢাকা-১ আসনে খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা-২ আসনে ইরফান ইবনে আমান, ঢাকা-৫ আসনে নবীউল্লাহ নবী, ঢাকা-৯ আসনে আফরোজা আব্বাস, ঢাকা-১১ আসনে শামীম আরা বেগম, ঢাকা-১২ আসনে সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা-১৪ আসনে সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক, ঢাকা-১৬ আসনে আহসান উল্লাহ হাসান, গাজীপুর-২ আসনে সালাহউদ্দিন সরকার, গাজীপুর-৪ আসনে শাহ রিয়াজুল হান্নান, নরসিংদী-৩ আসনে মঞ্জুর এলাহী, নরসিংদী-৫ আসনে আশরাফউদ্দিন বকুল, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আজহারুল ইসলাম মান্নান, ফরিদপুর-৪ আসনে ইকবাল হোসেন খন্দকার সেলিম, গোপালগঞ্জ-৩ আসনে এসএম আফজাল হোসেন, মাদারীপুর-১ আসনে সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলু, মাদারিপুর-২ আসনে মিল্টন বৈদ্য, মাদারিপুর-৩ আসনে আনিসুর রহমান খোকন তালুকদার, শরিয়তপুর-৩ আসনে মিয়া নুরুদ্দিন অপু;
সিলেট বিভাগ: সুনামগঞ্জ-৫ আসনে মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-১ আসনে খন্দকার আবদুল মোক্তাদির, সিলেট-২ আসনে তাহসিনা রুশদীর লুনা, সিলেট-৬ আসনে ফয়সল আহমেদ চৌধুরী, মৌলভীবাজার-১ আসনে নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু;
চট্টগ্রাম বিভাগ: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে কাজী নাজমুল হোসেন তাপস, কুমিল্লা-৩ আসনে কাজী মুজিবুল হক, চাঁদপুর-১ আসনে মোশারফ হোসেন, চাঁদপুর-২ আসনে ড. জালালউদ্দিন, চাঁদপুর-৪ আসনে এমএ হান্নান, ফেনী-১ আসনে রফিকুল ইসলাম মজনু, ফেনী-৩ আসনে আকবর হোসেন, চট্টগ্রাম-১ আসনে নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম-২ আসনে আজিমউল্লাহ বাহার, চট্টগ্রাম-৪ আসনে ইসহাক চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৬ আসনে জসিমউদ্দিন সিকদার, চট্টগ্রাম-৮ আসনে আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম-৯ আসনে ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম-১২ আসনে এনামুল হক এনাম ও পাবর্ত্য খাগড়াছড়ি শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদ।
নারী প্রার্থী: ধানের শীষের টিকিট পেয়েছেন ১৬ জন নারী প্রার্থী। তারা হলেন- রংপুর-৩ আসনে রিটা রহমান, বগুড়া-৩ আসনে মাসুদা মোমিন, নাটোর-২ আসনে সাবিনা ইয়াসমিন, সিরাজগঞ্জ-১ রুমানা মোরশেদ কনকচাঁপা, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে রুমানা মাহমুদ, ঝালকাঠি-২ আসনে জেবা আমিন খান, পটুয়াখালী-২ আসনে সালমা আলম, শেরপুর-১ আসনে ডা. সানসিলা জেবরিন, নেত্রকোনা-৪ আসনে তাহমিনা জামান শ্রাবণী, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে আফরোজা খানম রীতা, টাঙ্গাইল-৮ আসনে ব্যারিস্টার কুঁড়ি সিদ্দিকী (কৃশ্রজলীগ), ঢাকা-৯ আসনে আফরোজা আব্বাস, ঢাকা-১১ আসনে শামীম আরা বেগম, ফরিদপুর-২ আসনে শামা ওবায়েদ ইসলাম, সিলেট-২ আসনে তাহসিনা রুশদীর লুনা ও কক্সবাজার-১ আসনে হাসিনা আহমেদ। এর মধ্যে ১৪জন বিএনপি ও দুইজন শরিক দলের প্রার্থী।
সংখ্যালঘু প্রার্থী: ধানের শীষের টিকিট পেয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৭ জন প্রার্থী। তারা হলেন- মাগুরা-২ আসনে নিতাই রায় চৌধুরী, টাঙ্গাইল-৬ আসনে অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী, ঢাকা-৩ আসনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা-৬ আসনে সুব্রত চৌধুরী (গণফোরাম), মাদারিপুর-২ আসনে মিল্টন বৈদ্য, পার্বত্য রাঙ্গামাটি মনি স্বপন দেওয়ান ও পার্বত্য বান্দরবান সাচিং প্রু জেরি। এর মধ্যে ৬ জন বিএনপি ও একজন গণফোরাম নেতা।