এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যা মামলায় ১১ জনের বিচার শুরু হয়েছে। সৌদি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সরকারি কৌশুলিরা সেখানে এই মামলায় বিবাদীদের পাঁচজনের মৃত্যুদন্ড চেয়েছেন। এ খবর দিয়েছে, বিবিসি বাংলা। জামাল খাসোগি ছিলেন সৌদি সরকারের কড়া সমালোচক। গত বছরের ২০শে অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর তাঁকে হত্যা করা হয়। সরকারি কৌশুলিরা দাবি করেছেন যে শৃঙ্খলাভঙ্গকারী কিছু সৌদি এজেন্ট তাকে হত্যা করেছে। জামাল খাসোগিকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের পাঠানো হয়েছিল।
তুরস্ক এই হত্যাকান্ডের জন্য মোট ১৮ জনকে দায়ী করে বিচারের মুখোমুখি করতে তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিল সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে।
এই বিচার সম্পর্কে সৌদি সরকারি গণমাধ্যমেও খুব কমই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। যে ফৌজদারি আদালতে বিচার চলছে তার প্রথম অধিবেশনে মামলার শুনানি হয়েছে। সেখানে ১১ জন আসামি এবং তাদের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগপত্রের একটা কপি চেয়েছেন। এটি পর্যালোচনা করার সময়ও চেয়েছেন। পরবর্তী শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। তুরস্কের কাছে এই মামলার প্রমানাদির জন্য যে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, তার উত্তর পাওয়া যায়নি। সৌদি এটর্নি জেনারেলকে উদ্ধৃত করে সৌদি প্রেস এজেন্সি এই খবর দিচ্ছে।
মামলায় ১১ জন আসামি কারা, সেই তথ্যও প্রকাশ করা হয়নি। এর আগে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, আরও দশ ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গত নভেম্বরে সৌদি ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর শালান বিন রাজিহ শালান বলেছিলেন, একজন ইন্টেলিজেন্স কর্মকর্তা এই হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিয়ে হত্যা কার্যকর করতে বলা হয়। তিনি আরও জানিয়েছেন, কিন্তু এই অফিসারের ওপরে আসলে নির্দেশ ছিল জামাল খাসোগিকে দেশে ফিরিয়ে আনার। শালান জানিয়েছেন, হত্যার পর জামাল খাসোগির দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় এবং এরপর স্থানীয় এক সহযোগীর হাতে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু তার দেহাবশেষ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে এই হত্যাকান্ডের সময় যে ১৫ জন সৌদি এজেন্ট সেখানে এসেছিল এবং পরে ইস্তাম্বুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ফিরে গেছে, তাদের চিহ্নিত করেছে তুরস্ক। কিন্তু এদের কেউ এখন এই মামলার আসামিদের মধ্যে আছে কীনা তা স্পষ্ট নয়।
পশ্চিমা দেশগুলোর অনেকরই ধারণা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানই এই হত্যাকান্ডের পেছনে রয়েছেন। কিন্তু তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে না। মার্কিন কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন যে, যুবরাজ মোহাম্মদের অনুমোদন ছাড়া এরকম একটি হত্যকান্ড ঘটানো সম্ভব নয়। তবে যুবরাজ মোহাম্মদ এই ঘটনায় তার কোন ভূমিকার কথা অস্বীকার করেছেন।