বিবিসি : ‘দ্যা ভ্যাটিকান ইজ আ গে অর্গানাইজেশন’ অর্থাৎ ভ্যাটিকান এটা সমকামী সংস্থা এই নামে বই লেখার পর ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ফ্রেঞ্চ এই লেখক দাবী করছেন ক্যাথলিক চার্চের প্রাণকেন্দ্রে কীভাবে দুর্নীতি এবং ভণ্ডামি লুকিয়ে আছে সেটাই তিনি উন্মোচন করেছেন।
ফ্রান্সের লেখক ফ্রিডেরিক মারটেল বলেছেন তিনি চার বছর ধরে অনুসন্ধান করে বইটি লিখেছেন।
তিনি দাবি করেছেন, কয়েক হাজার যাজক গোপনে সমকামী জীবনযাপন করেন। আবার তারাই জনসাধারণের সামনে এই সমকামিতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে।
তিনি বলেছেন, ‘তারা সমকামিতা নিয়ে যতটা সমালোচনা করেছে তারা গোপনে সমকামী জীবন উপভোগে ততোটাই কামুক।’
মারটেল বিবিসিকে বলেছেন, ‘চার বছরের অনুসন্ধানের ফলাফল এই বই। আমি কয়েকটা দেশে গিয়েছি। এবং কয়েক ডজন কার্ডিনাল, বিশপ এবং যারা যাজক হওয়ার জন্য শিক্ষা নিচ্ছে এবং যারা ভ্যাটিকানের সাথে যুক্ত তাদের সাক্ষাতকার নিয়েছি।’
মারটেল বলেছেন, তিনি ৪১ জন কার্ডিনাল, ৫২ জন বিশপ এবং দুইশর বেশি যাজক, শিক্ষার্থী এবং রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, অনেক তরুণ যারা তাদের গ্রামে নিজেদের যৌন বৈশিষ্ট্যের জন্য নিগৃহীত হয় তারা পালানোর একটা পথ হিসেবে যাজক জীবনকে বেছে নেয়।
এভাবেই চার্চ ‘একটা ইন্সটিটিউশনে পরিণত হয়েছে যেখানে বেশিরভাগ সমকামী’।
লেখক দাবি করেছেন, ‘আমি আবিষ্কার করেছি ভ্যাটিকান একটা উচ্চ পর্যায়ের সমকামী সংস্থা।’
‘সমকামীরা একটা কাঠামো তৈরি করেছে, যার ফলে দিনে তারা তাদের যৌন বৈশিষ্ট্য দমন করে রাখে। কিন্তু রাতে প্রায় ক্যাব (গাড়ি) নিয়ে সমকামী বারে যায়।’
মারটেলকে একটা সূত্র বলেছে, ভ্যাটিকানে ৮০% সমকামী।
কিন্তু ফ্রেন্স এই লেখক নিরপেক্ষভাবে সংখ্যাটি নিশ্চিত করতে পারেননি।
লেখক বলেছেন, তিনি এমন অনেক প্রমাণ পেয়েছেন- যেসব যাজকরা জনসাধারণের কাছে সমকামিতা নিয়ে কটাক্ষ করে, ব্যক্তিজীবনে তারা সমকামী। এমন হাজারো উদাহরণ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
মারটেল যে অভিযোগ করেছে সেটা নিয়ে মন্তব্য করার জন্য বিবিসি ভ্যাটিকানের সাথে যোগাযোগ করে। কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কিন্তু ধর্মতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ জেমস মার্টিন ফ্রেঞ্চ এই লেখক যে উপায়ে সাক্ষাতকার থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বিবিসিকে বলেছেন, ‘মারটেল তার বইয়ের জন্য গভীর অনুসন্ধান করেছে এবং তিনি চার্চে সমকামিতা এবং ভণ্ডামির কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারণা দিয়েছেন।’
‘কিন্তু এই ধারণা বরফ ধসের নিচে যেমন চাপা পড়ে তেমনি ভাবে চাপা পড়ে যাবে পরোক্ষ বক্রোক্তি, রটনা, গুজবের মতো করে। এবং এটা পাঠকদের হতবিহবল করে দিবে। এটা তাদের জন্য কঠিন হবে বাস্তবতা এবং মিথ্যা গল্পের মধ্যে পার্থক্য করা যেমন কঠিন কাজ তেমনটা’, বলেন জেমস মার্টিন।