রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু মহামারি রুপ ধারণ করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে হাজার হাজার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষেরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। ইতিমধ্যে ডাক্তার, ছাত্র, নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগিদের সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছে। পর্যাপ্ত সেবা ও ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে না।
অন্যদিকে রাজধানীর বাইরে দেশের বেশির ভাগ জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। সরকারি হিসাবেই ২৩ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য রয়েছে। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও বেশি। প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে তা এখন মহামারিতে রুপ নিয়েছে। অথচ সক্ষমতা থাকার পরও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার এখন পর্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। উল্টো এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিকে গুজব বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এই ডেঙ্গুর উৎপাত নতুন কিছু না। গত ১০ বছর ধরেই ডেঙ্গুর প্রকোপ চলে আসছে। এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) আগেই সরকারকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মশা নিধনের জন্য যতটুকু লোক দেখানো ঔষধ ছিটানো হয়েছে তাও কোন কাজ করছে না। সরকার ও মেয়ররা দায়সারা বক্তব্য দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। সরকারের এমন দায়িত্বহীনতার কারণেই ডেঙ্গু আজ ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে এবং মানুষের ব্যপক প্রাণহানি হচ্ছে। সরকার এ দায় এড়াতে পারবে না।
নেতৃবৃন্দ জনগণের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, নাগরিকদের নিজেদেরকেও সচেতন হতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, জমা হওয়া স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। তাই ঘরে সাজানো ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, যেকোনো পাত্র বা জায়গায় জমে থাকা পানি তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ফেলে দিতে হবে। এডিস মশা সাধারণত সূর্যোদয়ের আধা ঘণ্টার মধ্যে ও সূর্যাস্তের আধা ঘণ্টা আগে কামড়াতে পছন্দ করে। তাই এই দুই সময়ে মশার কামড় থেকে সাবধানে থাকতে হবে। ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। এটা ডেঙ্গু প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা। ডেঙ্গু জ্বর সন্দেহ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসা করাতে হবে।
নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, ডেঙ্গু মহামারি রুপ ধারণ করেছে। দেশের মানুষ এখন আতঙ্কিত। আপনাদের দায়িত্বহীনতা ও দোষারোপের অপরাজনীতি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। যা দেশে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। সুতরাং অবিলম্বে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।