ঢাকার গুলশান থেকে অপহৃত মোহনা টেলিভিশনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মুশফিকুর রহমানকে সুনামগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে সদর উপজেলার গৌবিনপুর গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শেষ খবর পর্যন্ত সাংবাদিক মুশফিকুর রহমানের অবস্থা উন্নতির দিকে।
পুলিশ জানায়, মুশফিকুর মঙ্গলবার ভোরে গোবিন্দপুর এলাকার একটি মসজিদের সামনে যান। সেখানে এক মুসল্লির কাছে তিনি কোথায় আছেন, তা জানতে চান। এরপর তার পরিচয় দেন। স্থানীয় বাসিন্দারা মোহনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর দাসের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে মুশফিকুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।
মঙ্গলরাব সকালে হাসপাতালে কথা হয় সাংবাদিক মুশফিকুর রহমানের সাথে। এ সময় তিনি বলেন, ‘৩ আগস্ট গুলশান গোলচত্বরের একটি হোটেলে আমার মামার সঙ্গে নাস্তা খাই। এরপর মিরপুরে নিজের বাসায় যাওয়ার জন্য বাসে উঠি। কিন্তু বাসে ওঠার পর বুঝতে পারলাম যে, বাসটি মিরপুরের যাচ্ছে না। এক পর্যায়ে বাসের লোকজন আমার মুখে পানি জাতীয় কিছু স্প্রে করে। এরপর আর কিছু বলতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জ্ঞান ফিরলে বুঝতে পারি, আমাকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা আমাকে অনেক মারপিট করেছে। মারপিটের এক পর্যায়ে গুলি করে হত্যা করার হুমকিও দেয় তারা। পানি খেতে চাইলে অপহরণকারীরা আমাকে পানিও খেতে দেয়নি। ৪ দিন আমাকে শুধু কেক ও পেয়ারা খেতে দেয়া হয়েছে।’
সাংবাদিক মুশফিকুর রহমানকে উদ্ধারের বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুল ইসলাম বলেন, গৌবিনপুর এলাকা থেকে ইমাম সাহেবের ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পুলিশ টিম তাকে উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, যেহেতু অপহরণ মামলাটি ঢাকায় করা হয়েছে তাই গুলশান থানার এসআই জাকির হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ আসছে। তারা এলে উদ্ধার হওয়া সাংবাদিক মুশফিকুর রহমানকে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সাংবাদিক মুশফিকুর। ঢাকার গুলশানে মামার সাথে দেখা করে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বলে অভিযোগ করে তার পরিবার।
এ ঘটনায় শনিবার রাতে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার মামা এজাবুল হক।
মুশফিকের পরিবারের দাবি, গত ২১ জুলাই একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছিল। ২২ জুলাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে রাজধানীর পল্লবী থানায় জিডি করেছিলেন মুশফিক।