এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : খুলনা ও গাজীপুরে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিচ্ছে দেশের প্রধান তিন দল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট, বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সম্মিলিত জাতীয় জোট আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দুই সিটিতে প্রধান তিন দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে এবং জোটের শরিকরা তাদের সমর্থন জানাবে। এরই মধ্যে জোটগুলো নীতিগতভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণার পর তারা আনুষ্ঠানিক সমর্থন জানাবে। জোটগতভাবে গণসংযোগ ও নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করতে শিগগিরই তারা বৈঠকে বসবেন। সেখানে দলের পাশাপাশি জোটগতভাবে সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হতে পারে। তবে মেয়র পদে তিন দলের প্রার্থীকে সমর্থন জানালেও শরিকরা কাউন্সিলর পদে ভাগ বসাতে চায়।
‘আওয়ামী লীগের প্রার্থীই ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী’- এমনটা জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক মঙ্গলবার বলেন, আনুষ্ঠানিক আলোচনা না হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই নৌকার প্রার্থীকে সমর্থনের বিষয়টি আগেভাগেই জানিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন দুই সিটির প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ করছে। দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত হলে জোটগতভাবে এ নিয়ে বসা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা দুই সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইসি তফসিল ঘোষণা করেছে। শিগগিরই আমরা প্রার্থী চূড়ান্ত করব। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার হলেও এর ফল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। তাই নির্বাচনে জয়ী হতে আমরা জোটগতভাবেই নির্বাচন করব। অতীতে আমরা সিটি নির্বাচনগুলো জোটগতভাবেই করেছি। জোটের পাশাপাশি অন্য দলগুলোর সমর্থনও আমরা চাইব।
গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে সম্মিলিত জাতীয় জোটের মুখপাত্র জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, নির্বাচনে জোটগত প্রার্থী হবে। জাতীয় পার্টি থেকে না পেলে জোটের মধ্য থেকে শক্ত প্রার্থী থাকলে তার হাতেই লাঙ্গল তুলে দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা প্রার্থিতা নিয়ে শিগগিরই জোটের বৈঠক করব। সেখানে সবার প্রত্যাশা ও প্রস্তাব মোতাবেক প্রার্থী বাছাই করা হবে।
কাউন্সিলর পদে ভাগ চায় ১৪ দলের শরিকরা : তফসিল ঘোষণার পর থেকেই মাঠে সরব উপস্থিতি ১৪ দলের শরিকদের। মেয়র পদের প্রার্থীর সন্ধান করছেন কেউ কেউ। অনেকেই মেয়র বাদ দিয়ে ছুটছেন কাউন্সিলর প্রার্থীর দিকে। ১৪ দলীয় জোটের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, মেয়র পদে প্রার্থিতা না থাকলেও কাউন্সিলর নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে অনেকেই ভাগ বসাবে। এরই মধ্যে জোট শরিকদের অনেকে মেয়র পদ বাদ দিয়ে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী সন্ধান করছেন। নির্বাচনের আগে ১৪ দলের বৈঠকে শরিকরা তাদের এসব প্রস্তাব তুলে ধরবে।
১৪ দলের শরিকদের শীর্ষপর্যায়ের দুই নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ চায় শুধু মেয়র পদে জোটগত সমর্থন। আর কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নতুবা যে যার মতো। এখানে আমাদের আপত্তি আছে। তারা বলেন, আমরা মেয়র পদে যদি আওয়ামী লীগের সমর্থন দিই, তাহলে কাউন্সিলরে আমাদের ছাড় দিতে হবে। সেখানেও জোটগত প্রার্থী দিতে হবে। মেয়র পদে আমাদের সম্ভাবনা না থাকলে কাউন্সিলরে অনেক সম্ভাবনা আছে। বিষয়টি নিয়ে ১৪ দলের বৈঠকে আলোচনা করব।
১৪ দলের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, জোটগতভাবে আলোচনা না হলেও তফসিল ঘোষিত দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীই হবে ১৪ দলের প্রার্থী। আমরা জোটগতভাবে সে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব।
১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া যুগান্তরকে বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থিতা নিয়ে এখনও কোনো আলোচনা করেনি। আর এককভাবে আমরা নির্বাচনের কথা ভাবছি না। আমরা ১৪ দলীয়ভাবে একক প্রার্থী দেব। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এগিয়ে থাকবে।
দলটির আরেক অংশের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, গাজীপুরে রানা নামে আমাদের একজন প্রার্থী আছে। খুলনায় প্রার্থী খুঁজছি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এখনও প্রার্থী নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা আশা করি, শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে ১৪ দলের বৈঠক হবে। সেখানে আমরাও মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রস্তাব রাখব। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত হবে।
জোট শরিক গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লাহ সিকদার বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জোটবদ্ধ নির্বাচন ছাড়া এখানে প্রার্থীর জয়লাভ সম্ভব না। এজন্য আমরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই সমর্থন দেব এবং ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করব।
১৪ দলের শরিক জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম জানান, আলোচনা না হলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীই হবেন ১৪ দলের প্রার্থী। বিষয়টি অনেকটাই পরিষ্কার জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করছে। এরপর হয়তো জোটগতভাবে বসবে। সেখানে আশা করি, সবাই নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দেবে। এ নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিধা বা আপত্তি নেই।
২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দিয়েছিল মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি।
আ’লীগের মনোনয়ন বিক্রি শুরু কাল : গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন ফরম বিক্রি বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বৃহস্পতি ও শুক্রবার (৫ ও ৬ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে মনোনয়নের আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যাবে। একই সঙ্গে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে মনোনয়নের আবেদনপত্র জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানায় আওয়ামী লীগ।
কাউন্সিলর প্রার্থীর তালিকা প্রেরণ : গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি প্যানেল তৈরির জন্য ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সদস্যদের নিয়ে বর্ধিত সভা করবে। সভায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কমপক্ষে তিনজনের একটি প্যানেল সুপারিশ করবে।
প্যানেলটি মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে প্রার্থীদের যোগ্যতা, নেতৃত্বের গুণাবলি ও জনপ্রিয়তা ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে কমপক্ষে তিনজনের সুপারিশ আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবারের মধ্যে প্রেরণ করতে বলেছে দলটি। সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচনে (৩টি ওয়ার্ড নিয়ে একটি সংরক্ষিত মহিলা আসন) উল্লিখিত নিয়মাবলি প্রযোজ্য।
জোটগতভাবে নির্বাচন করবে ২০ দল : অতীতের মতো এবারও বিএনপি জোটগতভাবে নির্বাচন করবে। দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী ঘোষণার পর জোট থেকে সমর্থন দেয়া হবে। সম্প্রতি জোটের বৈঠকে এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। রোববার বিএনপির সিনিয়র নেতারা বৈঠক করে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। জোটের সমর্থন পেতে শিগগিরই তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে দলটি। মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন জানালেও কয়েকটি কাউন্সিলর পদ চাইতে পারে শরিকরা। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী এ নিয়ে দরকষাকষি করতে পারে। তাই সমঝোতার ভিত্তিতে হলে জামায়াতকে কয়েকটি কাউন্সিলর পদ ছেড়ে দেয়া হতে পারে।
জানা গেছে, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে জোটের শরিকদের মানসিকতার বিষয়টি স্পষ্ট করতেই এ সিদ্ধান্ত। জোটগতভাবে জাতীয় নির্বাচন করার ক্ষেত্রে কোনো সংকট সৃষ্টি হতে পারে কিনা, তার ইঙ্গিতও পাওয়া যেতে পারে এ নির্বাচনে। এ ছাড়া জোটের মধ্যে নানা বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর জোট ভাঙার শঙ্কাও রয়েছে। তাই জোটের ঐক্য আরও অটুট রাখতে আসন্ন নির্বাচন জোটগতভাবে করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। জোটের মধ্যে যেসব সমস্যা রয়েছে তা শিগগির মিটিয়ে ফেলা হবে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ড নিয়ে কিছুটা সন্দেহ জোট নেতাদের। নির্বাচনে তারা জোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে কিনা- সেই বিষয়টিও মনিটরিং করা হবে। স্থগিত হয়ে যাওয়া ঢাকা উত্তর সিটির উপনির্বাচনে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে এ সন্দেহ আরও প্রকট হয়েছে। ওই নির্বাচনে জোটের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই জামায়াত নেতা সেলিম উদ্দিন উত্তরের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ শুরু করেছিল। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু যুগান্তরকে বলেন, দুই সিটির নির্বাচনে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিগগির প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। বিএনপির প্রার্থীকে জোটের পক্ষ থেকে সমর্থন দেয়া হতে পারে। তবে শরিকদের কোনো চাওয়া-পাওয়া থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে বলে আশা করি।
জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ২০ দলীয় জোটে আছে। জোটের সিদ্ধান্তকে আমরা শিরোধার্য মনে করি। জোটের প্রার্থীর পক্ষে কল্যাণ পার্টি প্রচারে অংশ নেবে।
২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, সম্প্রতি জোটের বৈঠকে জোটগতভাবে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, জোটগতভাবেই আমরা নির্বাচনে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। শিগগির জোটের বৈঠক ডেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হতে পারে।
বৃহস্পতিবার বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিক্রি : গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন ইচ্ছুক প্রার্থীদের মধ্যে ফরম বিক্রি করবে বিএনপি। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। রোববার সন্ধ্যা ৭টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মনোনয়ন ইচ্ছুক প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী প্রমুখ।
রিজভী বলেন, ১৫ মে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। এই দুই সিটি নির্বাচনে যারা বিএনপির মনোনয়ন পেতে আগ্রহী তাদেরকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে ১০ হাজার টাকায় এবং ফরম জমা দেয়ার সময় প্রার্থীকে জামানত হিসেবে দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা। মনোনয়ন ইচ্ছুক প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার ৮ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হবে বলে জানান রিজভী।
একক প্রার্থীর কথা ভাবছে জাতীয় পার্টি : রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জয়কে বাতিঘর ধরে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে একক প্রার্থীর কথা ভাবছে জাতীয় পার্টি। ইতিমধ্যে দলটি জনপ্রিয়, ক্লিন ইমেজ ও যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী সন্ধান শুরু করছে এই দুই সিটিতে। ক্ষমতাসীন মহাজোটগত নির্বাচনের চিন্তা আপাতত করছে না সংসদের এই বিরোধী দলটি। তবে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের (ইউএনএ) ব্যানারে লাঙ্গলের প্রার্থী নিয়ে মাঠে কাজ করছে জাপা।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার মঙ্গলবার বলেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা একক প্রার্থী খুঁজছি। জনপ্রিয় ও যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী দেখে আমরা লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী দেব। লাঙ্গলের প্রার্থীই হবে সম্মিলিত জাতীয় জোটের প্রার্থী।
তিনি বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছি। জয়ের ধারাবাহিকতায় সুন্দরগঞ্জ উপনির্বাচনেও আমরা জয়লাভ করেছি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে জনপ্রিয় দলীয় প্রার্থী খুঁজছেন। আমরা জনপ্রিয়, গ্রহণযোগ্য ও যোগ্যতম প্রার্থীর সন্ধান করছি। প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে তা নিয়ে সম্মিলিত জাতীয় জোটের নেতাদের নিয়ে বসব। ক্ষমতাসীন মহাজোটগত নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, আপাতত মহাজোটগত নির্বাচনের কথা ভাবছি না। এ নিয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি।
গত বছর ৭ মে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে সম্মিলিত জাতীয় জোট (বিএনএ) গঠিত হয়। জোটে জাতীয় পার্টির সঙ্গে রয়েছে আল্লামা এমএম মান্নানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, আলহাজ আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুকের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ইসলামী মহাজোট এবং সেকান্দার আলী মনির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় জোটসহ ৫৮টি দল। এ জোটের ব্যানারে আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনের প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জোট চেয়ারম্যান এরশাদ। ২৪ মার্চ এ জোটটি রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল জনসমাবেশ করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচিও সম্মিলিত জাতীয় জোটের ব্যানারে করছে জোট শরিকরা। সূত্র : যুগান্তর